স্টাফ রিপোর্টার: আজ ২২ শ্রাবণ। বাংলা সাহিত্য ও কাব্যগীতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৪তম প্রয়াণ দিবস। ১৩৪৮ বঙ্গব্দের ২২ শ্রাবণ (৬ আগস্ট, ১৯৪১) কোলকাতার জোড়াসাঁকোয় ঠাকুরবাড়িতে তিনি মারা যান। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বহু শাখা তার ছোঁয়ায় ঐশ্বর্যমণ্ডিত হয়েছে। আধুনিক ছোটো গল্পের প্রতিকৃত রবি ঠাকুর উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, গানের বিচিত্র বাণী ও সুরে এবং দার্শনিক চিন্তাসমৃদ্ধ প্রবন্ধ ও ভাষণে বিশ্বমানবের সৃজনশীল অমিত শক্তিকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন সারাজীবন।
রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়েছিলো কোলকাতার এক পিরালী ব্রাহ্মণ পরিবারে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (জন্ম- ৭ মে, ১৮৬১ এবং মৃত্যু- ৭ আগস্ট, ১৯৪১) (২৫ বোশেখ, ১২৬৮, ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) বাংলার দিকপাল কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি প্রথম কবিতা লেখেন। ১৮৮৭ সালে ভানুসিংহ ছদ্মনামে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়।
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে প্রথম বাঙালি এবং এশীয় হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। নোবেল ফাউন্ডেশন তার এই কাব্যগ্রন্থটিকে বর্ণনা করেছিলো একটি গভীরভাবে সংবেদনশীল, উজ্জ্বল ও সুন্দর কাব্যগ্রন্থ রূপে। তার লেখা আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি… গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত।
তাই তিনি বিশ্বকবি- অনুরাগীদের প্রিয় গুরুদেব। আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের গীতিকার রবীন্দ্রনাথ আলোকিত মানুষ দিয়ে আলোকিত পৃথিবী গড়ার সাধনায় ব্রতীদের সাফল্য কামনা করেছেন। তাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন, প্রভু মোচন কর ভয়/ সব দৈন্য করহ লয়/নিত্যচকিত চঞ্চলচিত কর নিঃসংশয়/ তিমির রাত্রি অন্ধ যাত্রী/ সমুখে তব দীপ্ত দীপ তুলিয়া ধর হে। বাঙালির যাপিতজীবনের সাথে তার কবিতা ও গান অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার কৃতিত্বের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন প্রথম এশীয় হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয়ী রবি ঠাকুর। সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয়, সে কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই তিনি অমন দৃঢ়তায় বলে গেছেন, মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের/ মূল্য দিতে হয়/সে প্রাণ অমৃতলোকে/ মৃত্যুকে করে জয়।
বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আজ বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হবে একক বক্তৃতা ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনুষ্ঠান। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও আজ দিনটি নানা আয়োজনে পালন করবে। বিটিভিসহ বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেল ও বেতারেও সম্প্রচার করা হবে বিশ্বকবির ওপর অনুষ্ঠান।