বিয়ের দু যুগেও সংসারে আসেনি সন্তান : লাশ হলো স্ত্রী

আলমডাঙ্গার পল্লি সোনাতনপুরে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মুখে বিষ দেয়ার অভিযোগ
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: অজুহাত‍! বিয়ের দু যুগেও সন্তান দিতে পারেনি স্ত্রী ঝর্ণা। এ কারণেই তার স্বামী আলমডাঙ্গার পল্লি সোনাতনপুরের সোনা মিয়া মাঝে মাঝেই নির্মমভাবে তাকে নির্যাতন করতো। আবারো বিয়ে করবে বলেও মন্তব্য করতো। এরই মাঝে লাশ হলো সন্তান দিতে না পারা স্ত্রী ঝর্ণা। তাকে হত্যা করে মুখে বিষ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কন্যাহারা পিতা মুন্সিগঞ্জ গড়গড়ির সিরাজুল ইসলাম। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে অলমডাঙ্গা থানা পুলিশ গতকাল বুধবার বিকেলে ঝর্ণার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। আজ বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হতে পারে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার আইলহাস ইউনিয়নের সোনাতনপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে সোনা মিয়ার (৪৫) সাথে দীর্ঘ ২৪ আগে মুন্সিগঞ্জ গড়গড়ি গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর সিরাজুলের মেয়ে ঝর্ণার (৪২) বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন তাদের সংসারে সন্তান না আসায় ঝর্ণা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। প্রথম দিকে অবশ্য স্বামীর উদারতায় ঝর্ণা সংসারে উন্নতি করার কাজেই মনোনীবেশ করেন। গত কয়েক মাস ধরে সোনা মিয়া বিগড়ে যায়। সন্তান না হওয়ায় আবার বিয়ে করবে বলে জানায়। দাম্পত্য কলহ দানা বাধে। গতকাল বুধবার ভোরে স্বামীগৃহে ঝর্ণা বিষপান করেছে বলে স্বামীসহ স্বামীর পরিবারের লোকজন প্রচার করে। নিথর দেহ নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, অনেক আগেই মারা গেছে। চিকিৎসকের এ কথা শুনে দ্রুত মৃতদেহ সরিয়ে নেয়া হয় হাসপাতাল থেকে। অপরদিকে খবর পেয়ে ঝর্ণার পিতা নিকটজনদের সাথে নিয়ে ছোটেন সোনাতনপুর গ্রামে লাশের পাশে। তিনি তথা ঝর্ণার পিতা অভিযোগ করে বলেন, মেয়ের সংসারে সন্তান না হওয়ার কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই জামাই অন্যতম আচরণ করতে থাকে। মারধর করে। মারধর সহ্য করতে না পেরে মেয়ে ঝর্ণা দু’বার আমার বাড়িতে ওঠে। এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় তাকে স্বামীর বাড়িতে ফের ফেরত পাঠানো হয়। গত বুধবার ভোরে এ নিয়ে দুজনার মধ্যে আবারো বাগবিতণ্ডা হয়। এরই এক পর্যায়ে ঝর্ণাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। অবস্থা বেগতিক দেখে ঘরে থাকা ইঁদুর মারা বিষ মুখে ঢেলে দেয়। সকালে সাড়ে ৬টার দিকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
এ ব্যাপারে সোনা মিয়ার পরিবারের লোকজন অবশ্য হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, সন্তান না হওয়ায় আবার বিয়ে করবে বলে জানালে সোনা মিয়ার ওপর অভিমান করে ঘরে থাকা ইঁদুর মারা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে ঝর্ণা। এ ব্যাপারে গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের এসআই জিয়াউল হক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ উদ্ধার করেন। তিনি জানান, লাশ ময়নাতদন্ত করলেই রহস্য বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

Leave a comment