কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন সেবা দিতে চালু হয়েছে কৃষি কল সেন্টার : ১৬১২৩ নম্বরেই সমাধান

 

স্টাফ রিপোর্টার: কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন সেবা দিতে চালু হয়েছে কৃষি কল সেন্টার। কৃষি বিষয়ক সকল পরামর্শ সেবা দিচ্ছে এ কল সেন্টার। কৃষি উন্নয়নে নতুন করে সংযোজন হলো কৃষি কল সেন্টার। সরকারিভাবে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জায়গা করে নিয়েছে। এ কল সেন্টারের নম্বর হচ্ছে ১৬১২৩।

কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন কৃষি তথ্য সার্ভিস ও প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ঢাকার ফার্মগেটের খামারবাড়ির কৃষিতথ্য সার্ভিসে চালু হয়েছে এটি। চলতি বছরের মাঝামাঝি ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দে  কৃষি কল সেন্টারের নতুন আলোকিত পথের যাত্রা শুরু হলো। রাষ্ট্রীয়ভাবে বরাদ্দ পেলো বিনাপয়সায় কৃষিতথ্য সেবা প্রযুক্তি জেনে নেয়ার নির্দিষ্ট ডিজিট ১৬১২৩।

যেভাবে চলছে কৃষি কল সেন্টার: যে কেউ তার মোবাইল বা টেলিফোন নম্বর থেকে ১৬১২৩ নম্বরে ফোন দিলেই ওপর প্রান্ত থেকে জানতে চাওয়া হবে কৃষি, মত্স্য বা প্রাণি কোন বিষয় জানতে চাওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট তথ্যের জন্য নির্দিষ্ট নম্বরে প্লেস করতে হবে। এরপর ওপর প্রান্ত থেকে সমস্যার কথা শুনে প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা দেয়া হবে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ সেবা প্রদান করা হয়।

কৃষি কল সেন্টারের ৫ জন অপারেটরের মধ্যে ৩ জন স্নাতক কৃষি, পশুচিকিত্সক এবং মত্স্যবিদ; বাকি ২ জন মাঠপর্যায়ের কৃষিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ। এছাড়াও যুক্ত রয়েছেন ৬ জন এক্সার্নাল বিশেষজ্ঞ, যাদের সাথে প্রয়োজনে কল সেন্টার গ্রাহককে মোবাইলফোনের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের উপপরিচালক (গণযোগাযোগ) কৃষিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কল সেন্টারটি স্থাপনে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটির দেয়া গাইডলাইন অনুসরণ করা হচ্ছে। কল সেন্টারে ২টি স্ট্যান্ডবাই সার্ভার, ফোনকল পরিচালনার জন্য আইভিআর এবং কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম অ্যান্ড ক্ল্যায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসহ ১টি অত্যাধুনিক সফটওয়ার রয়েছে। বিদ্যুত্ সরবরাহ বন্ধ থাকলেও অন্তত ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে চালাতে বিদ্যুতের ব্যাকআপ রয়েছে। কলসার্ভারটি একসাথে ৩০টি কল রিসিভ করে সেবা দিতে পারে।

তথ্য অনুযায়ী, কল সেন্টারের মাধ্যমে কৃষি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৩ বছরের জন্য ৪ কোটি টাকার একটি কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। কৃষি কল সেন্টারের ১৬১২৩  নম্বারের হেল্পলাইনে একযোগে ১০টি ফোনের সাথে অপারেটরের মাধ্যমে বিনা পয়সায় গ্রাহকসেবা দেয়া হবে। ১০ জন এক্সটারনাল বিশেষজ্ঞসহ ১০ জন অপারেটর প্রতি দিন ৮ ঘণ্টা করে সেবা দেবেন।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ভারতে কিষাণ কল সেন্টারে গ্রাহক সংখ্যা ৩ লাখের বেশি, যারা বিনা পয়সায় কল সেবার সুযোগ পাচ্ছেন। শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং কেনিয়াতেও সাফল্যজনকভাবে এগিয়ে চলছে কৃষি কল সেন্টারের কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, কৃষি তথ্য সার্ভিস ও প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশের ২০১১ সালের জুন মাসে কল সেন্টার বিষয়ে একটি প্রাথমিক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি মোতাবেক খামারবাড়িতে কল সেন্টারটি স্থাপন করা হয়। ২০১২ সালের জুন মাসে পরীক্ষামূলকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ইতিমধ্যে এ কল সেন্টার ২৫ হাজারের বেশি ফোন কল রিসিভ করেছে। ১৫ হাজার কলারকে কৃষি মত্স্য প্রাণিসম্পদসহ কৃষির বিভিন্ন বিষয়ের অনুসন্ধানের উত্তর তাত্ক্ষণিকভাবে দেয়া হয়েছে এবং বাকি অনুসন্ধানগুলোর উত্তর বিভিন্ন উত্স থেকে সংগ্রহ করে পরে কলারদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। মোট কলারদের মধ্য থেকে ১০ হাজারের ফলোআপে জানা গেছে, তাদের দেয়া তথ্য সন্তোষজনকভাবে কাজে লাগাতে পেরেছেন।

Leave a comment