দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জয়রামপুর গাতিরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মতি হুজুরের বিরুদ্ধে মসজিদের পাশের বাড়ির জনৈক ব্যক্তির স্ত্রীকে ফুঁসলিয়ে দেহভোগের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মসজিদ পরিচালনা কমিটি তাকে ইমামতির পদ থেকে বরখাস্ত করেছেন। সেই সাথে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত মসজিদভিত্তিক ইসলামী পাঠাগারের শিক্ষক পদ থেকেও নারীলোভী লম্পট ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের জন্য মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এদিকে ইমাম মতি হুজুরের এ ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে উত্তেজিত গ্রামবাসী এলাকাবাসী মতি হুজুরকে পাকড়াও করতে গেলে তিনি জনরোষ থেকে বাঁচতে গাঢাকা দেন। এ নিয়ে গত শনিবার গ্রামে সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হলে ইমাম মতি হুজুর সালিস বৈঠকে হাজির হননি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহল্লায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর ঠাকুরপাড়ার মৃত মফিজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে ৩ সন্তানের জনক মতি হুজুর (৪০) প্রায় দু বছর ধরে গাতিরপাড়া জামে সমজিদে ইমামতি করে আসছিলেন। প্রায় আনুমানিক ৩/৪ মাস আগে ওই মসজিদের পাশের বাড়ির বাসিন্দা এক গৃহবধূর সাথে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাকে ফুঁসলিয়ে একাধিকবার দেহভোগ করে লম্পট ইমাম মতি হুজুর। ওই গৃহবধূর স্বামী বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মোবাইলফোন অটোরেকর্ড চালু করে রাখেন। গত বৃহস্পতিবার ওই মোবাইলে অটোরেকর্ডে ধরা পড়ে মতি হুজুর ও গৃহবধূর গোপন কথোপকথন। ওই রেকর্ডে মতি হুজুর ও গৃহবধূর বাজে ভাষায় যে সমস্ত আলাপচারিতা করেছে তা পত্রিকায় লেখা সম্ভব নয়। মোবাইলে রেকর্ড শোনার পরপরই জনৈক ব্যক্তি ও তার পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং লম্পট ইমাম মতি হুজুরকে খুঁজতে শুরু করেন। জনৈক ব্যক্তি তার শ্বশুরকে ডেকে নিয়ে তার মেয়ের কীর্তি-কাহিনী শোনান এবং তার মেয়েকে নিয়ে যেতে বলেন। বিষয়টি মহল্লায় জানাজানি হয়ে পড়লে জনরোষ থেকে বাঁচতে মতি হুজুর গাঢাকা দেন। গত শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত মতি হুজুর আত্মগোপন করে আছে বলে গ্রামবাসীরা জানায়। মহল্লাবাসী মতি হুজুরকে কয়েক দফা তার নিজ বাড়ি ঠাকুরপাড়ায় খুঁজতে গিয়েও পায়নি বলে জানিয়েছেন।
মহল্লাবাসীরা আরো জানান, মোবাইলে যে সমস্ত কথোপকথন হয়েছে তা শুনলে যে কোনো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির গা শিউরে উঠবে। লম্পট মতি হুজুর মাঝে মধেই ভোর রাতে মসজিদে এসে ওই গৃহবধূর সাথে দৈহিক মেলামেশা করার পর নাপাক অবস্থায় আমাদের নামাজ পড়িয়েছেন। তারা আরো বলেন, মতি হুজুর ইতঃপূর্বে বড় দুধপাতিলা, লোকনাথপুর, চুয়াডাঙ্গাসহ যেখানে যেখানে ইমামতি করতে গেছে সবখানেই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাকে গ্রামের নওদাপাড়ায় একবার একটি কান কেটে দেয়া হয়েছিলো বলে।
এ বিষয়ে গাতিরপাড়া সমজিদ কমিটির সভাপতি জসীম উদ্দিন চাকলা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মতি হুজুর যে ধরনের অপরাধ করেছেন মহল্লাবাসী তাকে হাতে পেলে পিটিয়েই মেরে ফেলতো। এ ঘটনায় মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে শনিবার মহল্লায় সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হলেও ওই ইমাম মতি হুজুর শেষ মেষ হাজির না হওয়ায় তা ভেস্তে যায়। মহল্লাবাসীর চাপে তাকে ইমামতির পদ থেকে বাতিল করা হয়েছে এবং তিনি পালিয়ে থাকায় মসজিদে পরিচালিত পাঠাগারটিও বন্ধ রয়েছে। বিধায় তাকে শিক্ষকের পদ থেকে বাতিল করে নতুন শিক্ষক দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।