স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে না মাদক কারবারিরা
দর্শনা অফিস: রক্ষকই যেন ভক্ষকের ভূমিকায় চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য অধিদফতরের সদস্যরা। শ্বশুর-জামাই রাম-রাজত্ব কায়েম করেছেন দর্শনাসহ আশপাশ এলাকায়। অভিযোগ রয়েছে, এদের কারণে মাদক কারবার থেকে নিজেকে গুটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কোনো উপায় নেই। মাদক কারবার করো বা না করো নিয়মিত বখরা দিতেই হবে চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্তা মফিজুল ইসলাম, আকবর আলী ও আব্দুর রশিদকে।
অভিযোগকারীরা বলেছেন, চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য অধিদফতরের সহকারী পরিদর্শক বিশ্বাস মফিজুল ইসলামের জামাতা এএসআই আকবর আলী। এছাড়া সিপাহী আব্দুর রশিদ দামুড়হুদার মদনার বাসিন্দা। সম্প্রতি আকবর আলী সিপাহী থেকে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হয়েছেন। আকবর আলী দীর্ঘ ৪ বছর চুয়াডাঙ্গায় সিপাহী পদে দায়িত্ব পালনকালে জেলার আনাচে-কানাচের মাদককারবারিদের সাথে গভীর সখ্য গড়ে তোলেন। পদোন্নতি পেয়ে মাস কয়েক আগে যশোর থেকে পুনরায় চুয়াডাঙ্গায় যোগদান করেন। এরপর থেকেই শুরু হয় শ্বশুর-জামাইয়ের জোট বাধা। পদোন্নতির খরচের টাকা তুলতে মরিয়া হয়ে ওঠেন আকবর আলী। দিনভর দর্শনা ও পার্শ্ববর্তী আকন্দবাড়িয়া, রাঙ্গিয়ারপোতা এবং সিংনগরে অভিযানের নামে মাদককারবারিদের সাথে শুরু করেন নতুনভাবে চুক্তি। দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক চুক্তিতে আবদ্ধ করা মাদককারবারিদের। চুক্তি ব্যাঘাত ঘটলেই বিপত্তি। অভিযানের নামে হয়রানি, মামলাসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া মাদক কারবার থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে কেউ ফিরতে চাইলেও আকবরসহ অন্যদের জন্য তা সম্ভব হয় না। মাদককারবারিরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেলেও চুক্তি মাফিক বখরা গুণতেই হবে। যে কারণে অনেকের ইচ্ছে থাকলেও মফিজুল, আকবর ও রশিদের কারণে মাদক কারবার থেকে ফিরতে পারেন না বলে অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।
বিজিবি, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা যখন চুয়াডাঙ্গায় মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে দফায় দফায় অভিযান রেখেছে অব্যাহত। আটক করা হচ্ছে মাদক কারবারিচক্রের সদস্য। চক্রের হোতাদের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে কঠোর আইনি পদক্ষেপ। ঠিক তখনই মাদক কারবারে উৎসাহিত করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। নিজেদের পকেট ভরতে বাধ্য করা হচ্ছে মাদক কারবার করতে। চুয়াডাঙ্গা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আসলাম হোসেনকে অনেকটাই বোকা বানিয়ে নিজেদের আখের গোছাচ্ছেন মফিজুল, আকবর ও রশিদ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য আসলাম হোসেনের কাছে দাবি তুলেছেন সচেতন মহল।
এদিকে নিজ জেলায় কিভাবে কর্মরত রয়েছেন আব্দুর রশিদ তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। দর্শনাসহ আশপাশ এলাকাকে মাদকমুক্ত করতে চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ডের পরিচালক লে. কর্নেল আমির মজিদ, চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন, ঝিনাইদাহ র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে দাবি তুলেছে এলাকাবাসী।