১৯৭১ সালে দর্শনার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাসীন আলীর স্ত্রী হাবিবা খাতুনের অজানা কথা
দর্শনা অফিস: ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে দর্শনার রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস ও সফল ভূমিকা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য অনেক গুরুত্ববহ ইতিহাস এখনো রয়েছে অজানা। এমনই একটি অজানা ইতিহাসের গল্প শোনালেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু। মায়ের কাছে বঙ্গবন্ধুর লেখা চিঠির স্মৃতিচারণ করলেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত অবস্থায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে রেলওয়ে কর্মকর্তা দর্শনার মহসীন আলী নির্মমভাবে শহীদ হন। পরবর্তীতে ১৯৭৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্র দর্শনার শহীদ মহসীন আলীর স্ত্রী সৈয়দা হাবিবা খাতুনকে প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ তহবিল থেকে ১ হাজার টাকাসহ সরাসরি চিঠির মাধ্যমে প্রেরণ করেন। জীবন্ত ইতিহাস কখনো চাপা থাকে না। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৯ বছর পর সরকারিভাবে এ চিঠির যথাযথ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। শহীদ মহসীন আলীর ছেলে চুয়াডাঙ্গা জেলার সাবেক প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু জাদুঘরের মহাপরিচালক রিয়াজ আহম্মদের নিকট একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চিঠিটি হস্তান্তর করেন। সাংবাদিকদের আমন্ত্রনে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দর্শনা প্রেসক্লাবে মতবিনিময় ও স্মৃতিচারণ করেন মাহফুজুর রহমান মঞ্জু। সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতাকালে শহীদ পিতার স্মৃতিচারণ এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নির্মমতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমার বাবা ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ সকাল ১০টায় কর্মস্থল খুলনার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। আমরা আওয়ামী পরিবার হওয়াতে প্রথম থেকেই পাকিস্তানিদের নজরে ছিলাম। পাক বাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় বাবাকে প্রথমে গুলি করে এবং পরবর্তীতে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করেছিলো। চুয়াডাঙ্গা জেলার গর্ব মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান মনজু আবেগ জড়িত কন্ঠে আরও বলেন, আমার বাবাসহ ৩০ লাখ মানুষ দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমরা দেশের জন্য অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছি। বর্তমানে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। ঠিক এ সময়ে কিছু মানুষ দেশকে পিছিয়ে নেয়ার যে চক্রান্ত করছে, তা প্রতিহত করার জন্য সকলের নিকট উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টিকারীদের রুখে দিয়ে দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করলেই তার বাবাসহ ৩০ লাখ শহীদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনদান স্বার্থক হবে। দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরুর সভাপতিত্বে বৈঠকে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক অ্যাড. শহিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সৈয়দ মজনুর রহমান, সকালের সময় পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক নুর হাকীম, দর্শনা পৌর আ.লীগের সহসভাপতি আমির হোসেন। সাংবাদিক হানিফ ম-লের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আওয়াল হোসেন, সাংবাদিক রিফাত রহমান, আজাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, এফএ আলমগীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন রাজু, চঞ্চল মেহমুদ, সাংবাদিক মাহমুদ হাসান রণি, নজরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান যুদ্ধ, মনিরুজ্জামান সুমন, আহসান হাবীব মামুন, জাহাঙ্গীর আলম, ওয়াসিম রয়েল, সুজন মাহমুদ, বাকীবিল্লাহ প্রমুখ।