ইকরা ও রসুলের দুদিনের রিমান্ড শুরু হচ্ছে আজ : দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে স্মারকলিপি পেশ

চুয়াডাঙ্গা গাড়াবাড়িয়ার আশরাফ উদ্দীনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মমভাবে নির্যাতন ও মাথায় শাবল গেঁথে খুন মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাড়াবাড়িয়ার আলোাচিত খুন মামলাসহ বহু মামলার আসামি ইকরামুল হক ইকরার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে এ স্মারকলিপি পেশ করা হয়। অপরদিকে আত্মসমর্পণের পর ইকরামুল হক ইকরা ও তার অন্যতমসহযোগী রসুলের দুদিনের পুলিশি রিমা- মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (তদন্ত) ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক বলেছেন, আজ বুধবার থেকে দুজকে সদর থানা কাস্টডিতে নিয়ে শুরু হবে জিজ্ঞাসাবাদ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাড়াবাড়িয়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার অর্ধশতাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, গাড়াবাড়িয়ার ইকরামুল হক ইকরা চিহ্নিত ত্রাস। তার বিরুদ্ধে গাড়াবাড়িয়ার মৃত ফাতেমা খাতুনের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলা, শরিফের স্ত্রীকে অপহরণ মামলা, জাফরপুর মোড়ে বঙ্গবন্ধুর কাঙ্গালীভোজের অনুষ্ঠানে হামলা, যুবলীগ নেতা নাসিরের বাড়ি ভাঙচুর ও নারী নির্যাতন মামলা, নাসিরসহ তার ৮ বছরের ছেলেকে মেরে হাত ভেঙে দেয়ার মামলা, গাড়াবাড়িয়অর রহমতের ছেলেকে অপহরণ মামলা, মুক্তার আলীকে অপহরণের চেষ্টা মামলা, ফজলুকে গাছের সাথে বেধে নির্যাতনসহ মাথায় কোপ মারা মামলা, শঙ্করচন্দ্র ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাককে মারধরসহ হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি হয়েও প্রকাশ্যেই ঘুরতো। মাঝে মাঝে পুলিশ অফিসারের মোটরসাইকেলও দেখা যেতো। চাচার লাইসেন্স করা বন্দুক নিয়েই শুধু নয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে গ্রামে মহড়া দিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত করে আসছিলো। পুলিশ ও পুলিশের কথিত সব সোর্সের সাথে প্রকাশ্যে ঘোরার কারণে গ্রামের সাধারণ মানুষ ছিলো শঙ্কিত। তাছাড়া ইকরা প্রকাশ্যেই বলে বেড়াতো পুলিশ আমার পকেটে। যা খুশি তাই করবো। কেউ কিছু করতে পারবে না। সে কারণে এলাকায় ওর বিরুদ্ধে তেমন কেউ মুখ খুলতে সাহস করেনি। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি দিবালোকে বেঁধে যুবলীগের কর্মী আশারাফ উদ্দীনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে মাথায় শাবল গেঁথে হত্যা করে ওই ইকরাসহ তার লোকজন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ওর পিতা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পিচ কমিটির সদস্যই শুধু ছিলো না জমি জালকারী হিসেবে ভূমিদস্যু হিসেবেও চিহ্নিত ছিলেন। তার ছেলে সন্ত্রাসী। একের পর এক অপরাধ করেও পার পাওয়ার কারনে নৃশংস খুনের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই ইকরা মুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরলে মানুষের মধ্যে নতুন করে শুধু আতঙ্কই ছড়াবে না, আরও অনেকেরই প্রাণ ঝরার আশঙ্কা স্পষ্ট। কারণ, আত্মসমর্পণ করার আগে ওই ইকরা তার ফেসবুকে লিখেছে আবার আসছি। কয়েকজনকে খুন করবো।
স্মারকলিপি গ্রহণের সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। পুলিশ সুপারের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তরিকুল ইসলাম। স্মারকলিপি প্রদানের সময় এলাকাবাসী ও নিহত আশরাফ উদ্দীনের সন্তানদের সাথে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আরশাদ উদ্দীন চন্দন, ওয়ার্ড সদস্য জিল্লুুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদ, শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি বাদল ম-লসহ অনেকেই উপস্থিত থেকে খুনসহ বহু মামলার আসামি ইকরামুল হক ইকরার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।