ভাদ্র গেলেও কাটেনি ভ্যাপসা গরম : চুয়াডাঙ্গায় লোডশেডিঙে বাড়ছে ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার: ভাদ্র গেলেও ভ্যপসা গরম কাটেনি। বরঞ্চ গরমের মাত্রা বেড়ে ঘেমে নেয়ে মানুষ যেন একাকার। চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি পাল্টাবে কবে, কখন? যখন নামবে বৃষ্টি। আবহওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে দমকা অস্থায়ী বাতাসসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভবনার কথা দু দিন থেকেই জানিয়ে আসছে। বাস্তবে উল্টো, মেঘমুক্ত আকাশ, রোদের প্রখরতায় ভেঁজা মাটির রস রূপ নিচ্ছে বাষ্পে। আবহওয়া বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বাতাসে বাষ্পের উপস্থিতির কারণেই প্রাণিকূল ভ্যপসা গরম অনুভব করে, অল্পতেই দেদারছে ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে পড়ে। পানি শূন্যতায় মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ে। এসএসসি, জেএসসি, পিএসসিসহ এইচএসসি পরীক্ষা আসন্ন। এ অবস্থায় বিদ্যুতের লোডশেডিং বৃদ্ধিতে অভিভাবকদের মধ্যেও পুঞ্জিভুত হচ্ছে ক্ষোভ।
চুয়াডাঙ্গায় গত ককেদিন ধরেই তাপমাত্রা রয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ময়মনসিংহে ৩৬ দশমিক ৭ আর চুয়াডাঙ্গায় ছিলো ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের তেমন কোথাও বৃষ্টি হয়নি। রাঙ্গামাটিতে মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বৃষ্টির প্রভাবে তাপমাত্রাও নেমে দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ২৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে দাঁড়ায়। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা যখন ৪০ পেরিয়ে ৪২ ছুঁই ছুঁই করে তখন লু হাওয়ায় তক যেন ঝলসে যায়। আর ভাদ্র মাসে? মাঝে মাঝেই ভ্যাপসা গরমের মাত্রা এতোটাই তিব্র হয়ে ওঠে যে, হাঁসফাঁস পরিস্থিতি ফুটে ওঠে। ভাদ্র গেছে, আশ্বিনের আজ দ্বিতীয় দিন। ভ্যাপসা গরমে অস্থির হওয়ার চেয়ে দিনপুঞ্জির দিকে তাকিয়ে শান্ত থাকাই ভালো বলে অনেকে মন্তব্য করলেও চুয়াডাঙ্গায় দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিঙের কারণে পরিস্থিতি আশান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কম নয়। ওজোপডিকোর চুয়াডাঙ্গা বিতরণ কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হলে সেই একই তথ্য, চাহিদা মতো বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে না বলেই লোডশেডিঙের মাধ্যমে ফিডারগুলোর গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে। কখন কতটুকু লোডশেডিং? এ প্রশ্নেরও স্পষ্ট জবাব নেই। জাতীয় গ্রিড থেকে যখন যেমন বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে তখন তেমনভাবেই বিদ্যুত বিতরণ করা হচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে বিদ্যুতের চাহিদা যেমন বাড়ে, তেমনই বরাদ্দও কমে। ফলে গরমের মাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে লোডশেডিংও বেড়ে যায়। তাছাড়া বিতরণ ব্যবস্থা পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত না হওয়ার কারণেও বিদ্যুত সরবরাহে সমস্যা লেগেই রয়েছে।
আবহওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, মরসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, জয়পুর, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মরসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র দূর্বল অবস্থায় রয়েছে। ফলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীয় দম্কা হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান হ্রাস পেতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।