অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে গাংনীতে মাইকিং : মিশ্র প্রতিক্রিয়া

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীতে প্রধান সড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ নির্দেশনা দিয়ে গতকাল সোমবার বিকেলে শহরে মাইকিং করা হয়েছে। উচ্ছেদের বিষয়টি ব্যবসায়ী ও এলাকার মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, গাংনী শহরের বুক চিরে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক। হাসপাতাল বাজার থেকে উত্তরপাড়া পর্যন্ত সড়কের দু পাশে কাঁচা-পাকা অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। কিন্তু কেন এই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ এবং এলাকার মানুষের জন্য কতোটা প্রয়োজন রয়েছে, সে বিষয়টি এখন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হাসপাতাল বাজারের দক্ষিণে গাংনী উপজেলা পরিষদ এবং উত্তরে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল। এর মাঝ দিয়ে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক। এলাকাটি হাসপাতাল বাজার হিসেবে পরিচিতি। এখানে সড়কের দু পাশে রয়েছে শতাধিক দোকানপাট। এর মধ্যে ফার্মেসি, কম্পিউটর-ফটোকপি, হোটেল, মুদি, ফল ও চা দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। হাসপাতালের পশ্চিম অংশ থেকে উপজেলা পরিষদের পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত সড়কের পাশে ব্যক্তি মালিকানা তেমন কোনো জমি নেই। ফলে সড়কের জায়গায় গড়ে উঠেছে এসব দোকানপাট।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দফতরের পাশাপাশি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কাজের জন্য প্রতিদিন এ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ শ মানুষ আসেন। অপরদিকে হাসপাতালে সব সময় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী সেবা নেন। এসব প্রয়োজনের তাগিদেই গড়ে উঠেছে হাসপাতাল বাজারের দোকানপাটগুলো। এমতাবস্থায় দোকানপাট ভেঙে দিলে চরম বিপাকে পড়বেন হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা এবং উপজেলা পরিষদে সেবা নিতে আসা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। বেকার হয়ে পড়বেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ফলে সামাজিক এক প্রকার অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করলেন ব্যবসায়ীরা। জনস্বার্থে অস্থায়ী এসব দোকানপাট নির্মিত হলেও জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে বলে জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাদের দাবি, হাসপাতাল বাজারের কিছু এলাকা জেলা পরিষদ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালিকানা রয়েছে। তাই জেলা পরিষদের জমির স্থাপনা কিভাবে সড়ক ও জনপথ উচ্ছেদ করবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সড়কের কোল ঘেঁষে থাকা স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়া হয় বেশ কিছু দূরত্বে। তাই বর্তমানে গাংনী শহরে অবৈধ স্থাপনার কারণে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। তাহলে সড়ক ও জনপথ কিসের জন্য উচ্ছেদ করবে তা ভেবে পাচ্ছেন না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। গাংনী শহরে দুই শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত। যাদের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন হচ্ছে ফুটপাতের সামান্য ব্যবসা। পুনর্বাসন ছাড়া আকস্মিক এই উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। বিভিন্নভাবে প্রতিবাদও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সূত্র গতরাতে জানায়, গাংনী বাজারের সমস্যাগুলো আলোচনার মধ্যদিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।