মসজিদের ইমামকে দিয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে পড়ানোর দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কনের পিতাকে জরিমানা

 

বেলগাছি প্রতিনিধি: গোপনে মসজিদের ইমামকে দিয়ে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের বিয়ে পড়িয়ে বিপাকে পড়েছেন আলমডাঙ্গার কেদারনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের আয়োজন করা হলে তাতে বাঁধ সাধেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। বাল্যবিয়ে না দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে মুচলেকায় স্বাক্ষরসহ ও কনের পিতাকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

এলাকাসূত্রে জানা গেছে, কেদারনগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা রাফিজা খাতুনের বিয়ে ঠিক হয় কুমারী ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের রশিদুল ইসলামের নাবালক ছেলে মুন্নার সাথে। প্রায় ১ মাস পূর্বে গোপনে তাদের বিয়ে পড়িয়ে রাখা হয়েছে বলে গ্রামের অনেকেই জানিয়েছেন। কেদারনগর গ্রামের মৃত তুষ্ট মণ্ডলের ছেলে উসমান গনি গোপনে অবৈধভাবে এ বিয়ে পড়িয়েছেন। উসমান গনি গ্রামের বিলপাড়ার জামে মসজিদের ইমাম। উপস্থিত ছিলেন সুবারের ছেলে আফেজ উদ্দীন, মৃত মফে মণ্ডলের ছেলে বাসের আলী, মেয়ের দাদা আরোজ আলী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই গ্রামের এক ব্যক্তি বলেছেন, অবৈধভাবে এ বিয়ের বিষয়টি গ্রামে খুব সমালোচনার সৃষ্টি করে। ফলে নিকাহ রেজিস্ট্রারকে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিয়ে ঠিক করতে উঠে পড়ে লাগে। একপর্যায়ে প্রায় ১৭-১৮ দিন পূর্বে বর-কনে তার বাড়িতে বিয়ের জন্য ওঠে। তিনি কাজিকেও সংবাদ দিয়ে আনেন। কিন্তু এতো কম বয়সের ছেলেমেয়ের বিয়ে পড়াতে কাজি রাজি হয়নি। গতকাল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। বরযাত্রী তো বটেই গ্রামের নেতাদের, মেম্বার-চেয়ারম্যানকেও দাওয়াত দেয়া হয়। আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে সংবাদ পেয়ে হঠাৎ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত হন। তিনি এ বাল্যবিয়ের অপচেষ্টার অভিযোগে কনের পিতা আব্দুর রাজ্জাককে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং এ বাল্যবিয়ে ভেঙে দেয়াসহ আর বাল্যবিয়ে না দেয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। এদিকে প্রশাসন কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সংবাদ পেয়ে বরযাত্রীসহ বর আর উপস্থিত হয়নি। বাল্যবিয়ের খানায় কোনো মেম্বার কিংবা গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত হননি। শেষে উপায়ান্তর না দেখে বিয়ের অনুষ্ঠানের সব খাবার বরের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় বলে গ্রামবাসী জানিয়েছ। এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করায় বিপাকে পড়েছে আব্দুর রাজ্জাক পরিবার। গ্রামবাসী প্রশ্ন তুলছে– প্রায় ১ মাস পূর্বে ইমামকে দিয়ে অবৈধভাবে গোপনে পড়ানোর বিয়ের দায় নেবে কে?