প্রস্তাব ধরে আলোচনার আশা খালেদার

 

স্টাফ রিপোর্টার: নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে তার দেয়া প্রস্তাব রাজনৈতিক সমঝোতার জন‌্য আলোচনার সূত্র হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার এক টুইটে তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ ইসি গঠনে আমি বিএনপির প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাইলে ক্ষমতাসীনরাও এর ভিত্তিতে আলোচনার সুযোগ নিতে পারে।’

নির্দলীয় সরকারের অধীনে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির প্রধান আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে শুক্রবার ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। ‘সব দলের’ মতৈক‌্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করে খালেদা জিয়া বলেছেন, এই কমিশন হতে হবে ‘সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, অথবা স্বাধীনতার পর প্রথম জাতীয় সংসদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে এমন সকল রাজনৈতিক দলের’ মতৈক‌্যের ভিত্তিতে। তার প্রস্তাব, ইসি নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি ঠিক করতে রাষ্ট্রপতি ‘প্রধান দুই রাজনৈতিক জোট’ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রতিনিধিসহ সব দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ আলোচনায় নাগরিক সমাজের মধ্য থেকে ‘সৎ, যোগ্য ও দল নিরপেক্ষ প্রতিনিধিদের’ও যুক্ত করা যেতে পারে বলে অভিমত তার। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে সব দল পাঁচ সদস‌্যের বাছাই কমিটি গঠনের জন‌্য প্রতি পদের বিপরীতে দুই জনের নাম প্রস্তাব করবে। সেখান থেকে সব দলের মতৈক‌্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি পাঁচ সদস‌্যের বাছাই কমিটি গঠন করবেন। তারাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন‌্য কমিশনারদের খুঁজে বের করবেন। কারা নির্বাচন কমিশনে আসতে পারবেন আর পারবেন না সে বিষয়েও প্রস্তাব রেখেছেন খালেদা জিয়া। অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনকারী কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আপত্তি জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া কোনো সরকারি কর্তৃপক্ষ বা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের চাকরি থেকে অবসর, পদত‌্যাগ বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ বা চুক্তি বাতিলের পর তিন বছর না পেরোলে তিনি নির্বাচন কমিশনের কোনো দায়িত্বে আসতে পারবেন না বলে শর্ত দিয়েছেন বিএনপি নেত্রী। আগামীতে সময়মতো ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ রূপরেখা দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে খালেদার এই প্রস্তাবকে ‘অন্তঃসারশূন‌্য’ বলে নাকচ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, এই প্রস্তাবের মধ‌্য দিয়ে বিএনপি নেত্রী ‘সংবিধানকে অবজ্ঞা’ করেছেন। সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করবেন তারা। রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটি করে যেভাবে বিগত নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিলেন, সে প্রক্রিয়া থেকে তাদের সরার ‘সুযোগ নেই’ বলে মন্তব‌্য করেছেন তিনি। ২০১২ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ‘সার্চ কমিটির’ মাধ্যমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। এই নির্বাচন কমিশনকে ‘সরকারের আজ্ঞাবহ’ দাবি করে বিএনপি বলছে, তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয়। দশম সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে কমিশনের উদাসীনতার অভিযোগ তুলে শেষ মুহূর্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি।