২৭ শর্তে সভার অনুমতি বিএনপির প্রত্যাখ্যান

 

স্টাফ রিপোর্টার: একেবারে শেষ মুহূর্তে মঙ্গলবার বিএনপিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ২৭ শর্তে আলোচনা সভার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তবে সেখানে কর্মসূচির অনুমতি চাওয়া হয়নি জানিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে দলটি। পাশাপাশি নতুন করে আগামী ১৩ নভেম্বর রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অংশ হিসেবে প্রথমে ৭ ও পরে ৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ডিএমপির কাছে আবেদন করেছিল বিএনপি। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না। এরপর ৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ফের আবেদন করে বিএনপি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ নভেম্বর রাতে ‘সড়কে সমাবেশ করা যাবে না’ মর্মে বিএনপিকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ডিএমপি ও ডিএসসিসির অনুমতি না পেয়ে বিএনপির করণীয় জানাতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি নতুন করে ১৩ নভেম্বর রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। এরপরই ডিএমপি থেকে খবর আসে, ২৭ শর্তে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার ‘আলোচনা সভা’ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর ডিএমপি কমিশনারের বিশেষ সহকারী সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বলা হয়েছে, এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের অভ্যন্তরে আলোচনা সভার যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। আলোচনা সভার নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভাস্থলের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে, নিজস্ব ব্যবস্থায় ভেইকল স্ক্যানার বা সার্চ মিররের মাধ্যমে আলোচনা সভাস্থলে আসা সব যানবাহনে তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আলোচনা সভাস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক-সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেকশন স্থাপন করা যাবে না। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতের কোথাও লোক সমবেত না হওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া সাড়ে চারটার মধ্যে সমাবেশ শেষ এবং মিছিল সহকারে ‘আলোচনা সভায়’ না আসার জন্য অনুমতিপত্রে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চায়নি। ঘরোয়া কর্মসূচি নয় বিএনপি চায় উন্মুক্ত স্থানে সমাবেশ করতে। তাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভা করার কোনো কারণ নেই। এ ছাড়া দলের সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১৩ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার, অন্য কোথাও নয়। তিনি আরও বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৩ নভেম্বরের সমাবেশের ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া, অর্থাৎ পুলিশকে চিঠি দেয়া, গণপূর্ত অধিদফতরকে চিঠি দেয়ার কাজগুলো বিএনপি শুরু করেছে।