চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ফিল্ম না থাকায় আট মাস ধরে এক্স-রে সেবা বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর হাসপাতালে ফিল্ম না থাকায় দুটি এক্স-রে মেশিন রোগীদের কাজে আসছে না। এর ফলে আট মাস ধরে এক্স-রে সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে রোগীদের বাইরের বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে এক্স-রে করাতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ১০ মাস পার হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট খাতে অর্থ বরাদ্দ ও দরপত্র নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় এক্স-রে ফিল্ম কেনা সম্ভব হয়নি। ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও বাইরে থেকে এক্স-রে করতে আসা রোগী ও স্বজনদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। টেকনিশিয়ান সেলিম হোসেন বলেন, হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন বেশ ভালো (৩০০ এমএ ও ১০০ এমএ) মানের। কিন্তু ফিল্মের অভাবে গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে এ সেবা বন্ধ রয়েছে। ফিল্ম কবে হাতে পাওয়া যাবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন একজন রোগীর স্বজন ও সদর উপজেলার খেজুরতলা গ্রামের মনজুর আহমেদ বলেন, হাসপাতালে এক্স-রে না হওয়ায় বেশি টাকা দিয়ে বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হয়েছে।

ওই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও সেবিকারা বলেন, এ বিভাগের বেশির ভাগ রোগীই সড়ক দুর্ঘটনায় জখম। হাসপাতাল থেকে বাইরে রোগী নিয়ে গিয়ে এক্স-রে করানো খুবই জটিল কাজ। কয়েকজন রোগী বলেন, হাসপাতালে এক্স-রে করাতে ৫৫ থেকে ৭০ টাকা লাগলেও বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্রে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা লাগে। কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি নেয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া হাসপাতালে উন্নতমানের ৩০০ এমএু এক্স-রে মেশিন থাকলেও বাইরে ১০০ বা ২০০ এমএ মেশিনে এক্স-রে করাতে হচ্ছে। অনেক সময় মান খারাপের অজুহাত দেখিয়ে বাইরে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচে ডিজিটাল মেশিনে এক্স-রে করানো হচ্ছে।

সদর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ৩ হাজার ৪৪৮টি এক্স-রে করা হয়েছে। এর মধ্যে গরিব রোগীদের বিনামূল্যে ২৭৬টি এক্স-রে করা হয়েছে। এ সময়ে আগের অর্থবছরের বরাদ্দ এক হাজার বড়, ৪০০ মাঝারি ও ১ হাজার ৪০০টি ছোট মিলিয়ে মোট ২ হাজার ৮০০টি এক্স-রে ফিল্ম সরবরাহ করা হয়েছে। ২৭ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সব রোগীকেই বাইরে থেকে এক্স-রে করাতে হচ্ছে।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মাসুদ রানা বলেন, ফিল্মের প্রয়োজন থাকলেও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নানামুখী জটিলতায় তা কেনা সম্ভব হয়নি। গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে দরপত্র গৃহীত এবং পরে তা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনও পেয়েছে। আশা করি মে মাসে ফিল্ম পাওয়া যাবে।