স্টাফ রিপোর্টার: সাগরের পানির সাহায্যে বিদ্যুত উৎপন্ন করে সেই বিদ্যুত দিয়ে বাতি জ্বলছে! তেমনি বায়ুর সাহায্যে বিদ্যুত উৎপন্ন করেছে একদল ক্ষুদে বিজ্ঞানী। এছাড়াও ৫ মিনিটে ঘরঠাণ্ডা করার এসি। প্রাকৃতিক উপায় গ্লোব তৈরি, ইটভাটা থেকে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন প্রতিরোধের উপায়, হোম সিকিউরিটি, ভূমিকম্প নিদের্শক যন্ত্র, ভূমিকম্প প্রতিরোধক বিল্ডিং, চোর ধরার যন্ত্র, স্বল্পমূল্যের বহুমুখ ওভেন, ডিজিটাল স্লাইড ক্যালিপার্সসহ বিভিন্ন উদ্ভাবনী বিষয়টি বিজ্ঞান মেলায় আগত দর্শনার্থীদেরকে অবাক করেছে। তাই দর্শনার্থীদের কৌতূহলেরও শেষ নেই। এসব প্রদর্শনী শিক্ষার্থীদেরকে বারবার দর্শনার্থীদের মাঝে উপস্থাপন করতে হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীরা লবণাক্ত পানি (সাগরের পানি) দিয়ে বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে চমক সৃষ্টি করেছে। তেমনি চুয়াডাঙ্গা একাডেমির শিক্ষার্থীরা বায়ু থেকে বিদ্যুত উৎপন্ন করেছে। চুয়াডাঙ্গা বিজ্ঞান ক্লাবের একদল ক্ষুদে বিজ্ঞানী ড্রেনের সাহায্যে তৈরি করেছে বিদ্যুত। চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভূমিকম্প নিদের্শক যন্ত্র, ভূমিকম্প প্রতিরোধক বিল্ডিং উদ্ভাবন করে চমক সৃষ্টি করেছে। ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ৫ মিনিটে ঘরঠাণ্ডা করার এসি ও প্রাকৃতিক উপায়ে কচুরিপানা দিয়ে তৈরি গ্লোব উদ্ভাবন করে দর্শকদের নজর কেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ৩৭তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা তাদের উদ্ভাবনী প্রদর্শনী করছে। ‘টেকসই উন্নয়নে চাই টেকসই প্রযুক্তি’ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় তিন দিনব্যাপী ৩৭তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফিতে কেটে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। মেলা আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর। এর আগে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরার সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ হামীম হাসান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ নওরোজ মোহাম্মদ সাইদ, প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান ও এসএম ইস্রাফিল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা।
সভায় প্রধান অতিথি বলেন, প্রযুক্তিতে বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটছে। নতুন নতুন প্রযুক্তি প্রতিনিয়তই আমরা আয়ত্ত করছি। সরকারের পরিকল্পনা মাফিক প্রযুক্তিই পারে তরুণদের প্রযুক্তির ওপর আকৃষ্ট করতে এবং তরুণদের মেধা কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। এ ধরনের বিজ্ঞানভিত্তিক মেলা নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আকৃষ্ট করে তুলবে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার সৈয়দা নাফিস সুলতানা।
পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। এবার মেলায় জেলার স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২৪টি স্টল রয়েছে। স্টলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবন ছিলো চোখে পড়ার মতো। মেলার সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৪ এপ্রিল সোমবার বিকেলে।