বাংলাদেশের মানুষের সাধারণ প্রবণতা হলো অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে দোকানির কথামতো এ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কিনে খাওয়া। বাংলাদেশে এ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার নিয়ে এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে বিদেশি এক গণমাধ্যমের বিশেষ প্রতিবেদনে। এ বিষয়ে চিকিৎসকেরা বলছেন, অপব্যবহারের কারণে এ্যান্টিবায়োটিক তার কার্যকারিতা হারাচ্ছে এবং সাময়িক উপকার পেলেও পরে রোগীকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগতে হচ্ছে। পরে কড়া ওষুধ খেলেও রোগ সারছে না।
আইসিডিআরবি নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে এ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে মনে করেন গবেষকরা। গ্রাম ডাক্তাররা ও ফার্মেসিতে বিক্রেতারা অবাধে এ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছে। এর শতকরা ৭৫ ভাগই সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না। বাংলাদেশে যে সকল ব্যবসা লাভজনক বলে বিবেচিত চিকিৎসা খাত তার মধ্যে শীর্ষে। বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্ব বাজারে অবস্থান করে নিয়েছে। এ দেশের অনেক ডাক্তারও সুনামের সাথে দেশ-বিদেশে চিকিৎসা দিচ্ছেন। সরকারি-বেসরকারি খাতে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারও দিন দিন বেড়ে চলেছে। তাতেও সঙ্কুলান হচ্ছে না। সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় লাখ লাখ মানুষ ছুটছে প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতা, মাদ্রাজ, ভেলর, মুম্বাই। সামর্থ্যবানরা ছুটছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ব্যাংককে। অবস্থা এমন যে, দেশে সুস্থ মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
আধুনিক চিকিৎসার কল্যাণে দেশ থেকে কলেরা, বসন্ত, কালাজ্বর জাতীয় অনেক সংক্রামক ব্যাধি নির্মূল হয়েছে সত্য, কিন্তু দেশে নানান ধরনের নতুন রোগব্যাধি ব্যাপকতা লাভ করেছে। এসব রোগব্যাধির চিকিৎসায় এক শ্রেণির ডাক্তার, ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসা ব্যবসায়ীরা বেছে নিয়েছে সাধারণ মানুষকে। নিম্নমানের ওষুধ, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অতিরিক্ত ফিসে জিম্মি করে ফেলেছে মানুষকে। এ থেকে পরিত্রাণে দরকার সচেতনতা বৃদ্ধি। আইন প্রয়োগ।