নজরুল ইসলাম: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়ন ভেঙে চার ইউনিয়ন ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। কোন কোন গ্রাম নিয়ে পুনর্গঠিত ও নবগঠিত ইউনিয়ন হচ্ছে তা জানার আগ্রহের যেন শেষ নেই ইউনিয়নবাসীর। তবে ইউনিয়ন ভেঙে গেজেট প্রকাশ হলেও হাইকোর্টে ৩টি রিটও করা হয়েছে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে। এদিকে ৩টি নবগঠিত ইউনিয়ন হওয়ায় সদর উপজেলার ইউনিয়নের সংখ্যা দাড়াবে ১০টি।
সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, ভৌগলিক ও জনসংখ্যার দিক বিবেচনা করে চুয়াডাঙ্গা সদরের শঙ্করচন্দ্র, বেগমপুর ও তিতুদহ এ তিনটি ইউনিয়ন বিভক্ত করে আর তিনটি নতুন ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। বিশেষ করে পুনর্গঠিত বেগমপুর ও তিতুদহ নবগঠিত নেহালপুর এবং গড়াইটুপি ইউনিয়ন কোন কোন গ্রাম নিয়ে গঠিত তা জানার আগ্রহের শেষ নেই। এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রেরিত পত্র প্রাপ্তির পর স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২০১৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তারিখের ৬৮৬ নং পত্রের নির্দেশক্রমে এবং স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) সংশোধন আইন ২০০৯ এর ১১ ধারা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের ওপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইন গত ২৪ জুন শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নকে বিভক্ত করে মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন, বেগমপুর ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নেহালপুর ইউনিয়ন ও তিতুদহ ইউনিয়নকে বিভক্ত করে নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়ন নামে তিনটি নতুন ইউনিয়ন এবং শঙ্করচন্দ্র, বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নকে পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুলিপি প্রেরণ করেন। তারই আলোকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশিত হয়। পুনর্গঠিত বেগমপুর ইউনিয়ন যে সমস্ত গ্রাম নিয়ে গঠিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বেগমপুর হাটপাড়া ও বগুলাপাড়া নিয়ে ১নং ওয়ার্ড, কলোনিপাড়া, চিলমারীপাড়া ও বিলপাড়া নিয়ে ২নং ওয়ার্ড, ঝাজরি গ্রাম নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড, যদুপুর গ্রাম নিয়ে ৪নং ওয়ার্ড, হরিশপুর ও ফুরশেদপুর গ্রাম নিয়ে ৫নং ওয়ার্ড, শৈলমারী ও উজলপুর নীলমারিপাড়া নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড, উজলপুর গ্রাম নিয়ে ৭নং ওয়ার্ড, আকন্দবাড়িয়া ৮নং ওয়ার্ড এবং রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রাম নিয়ে ৯নং ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে। নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের যে সমস্ত গ্রাম নিয়ে ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে সে গুলো হচ্ছে বোয়ালিয়া গ্রাম ১নং ওয়ার্ড, নেহালপুর দক্ষিণপাড়া ২নং ওয়ার্ড, নেহালপুর পূর্বপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও বোয়ালিয়া চৌধুরীপাড়া নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড, হিজলগাড়ি ও নলবিলা গ্রাম নিয়ে ৪নং ওয়ার্ড, ডিহি ও রনগোহাইল গ্রাম নিয়ে ৫নং ওয়ার্ড, কৃষ্ণপুর গ্রাম ৬নং ওয়ার্ড, দোস্ত গ্রাম ৭নং ওয়ার্ড, কুন্দিপুর গ্রাম ৮নং ওয়ার্ড এবং কোটালী ও দর্শনা গ্রাম নিয়ে ৯নং ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে। অপর দিকে পুনর্গঠিত তিতুদহ ইউনিয়নের যে সমস্ত গ্রাম নিয়ে ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে সে গুলো হচ্ছে চাঁদপুর ও নুরুল্লাপুর গ্রাম নিয়ে ১নং ওয়ার্ড, গিরিশনগর, আড়িয়ারচোক, ৬৩ আড়িয়া ও ৬২ আড়িয়া গ্রাম নিয়ে ২নং ওয়ার্ড, ছোটশলুয়া ৩নং ওয়ার্ড, বলদিয়া মাদরাসাপাড়া ও কাজলাপাড়া নিয়ে ৪নং ওয়ার্ড, বলদিয়া বাইনেগাড়িপাড়া ও পুরাতনপাড়া নিয়ে ৫নং ওয়ার্ড, বড়শলুয়া দক্ষিণপাড়া ৬নং ওয়ার্ড, বড়শলুয়া উত্তরপাড়া ৭নং ওয়ার্ড, হুলিয়ামারিপাড়া ৮নং ওয়ার্ড, তিতুদহ গ্রাম ৯নং ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে। নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের যে সমস্ত গ্রাম নিয়ে গঠিত হয়েছে ওয়ার্ড তা হলো কালুপোল ১নং ওয়ার্ড, গোষ্টবিহার ও খেজুরতলা গ্রাম ২নং ওয়ার্ড খাড়াগোদা ও জামালপুর গ্রাম নিয়ে ৩নং ওয়ার্ড, গড়াইটুপি ও বিত্তিরদাড়ি ৪নং ওয়ার্ড, তেঘরি ও কলাগাছি গ্রাম ৫নং ওয়ার্ড, গহেরপুর ৬নং ওয়ার্ড, বাটিকাডাঙ্গা ও সুজায়েতপুর ৭নং ওয়ার্ড, সড়াবাড়িয়া ও খাসপাড়া ৮নং ওয়ার্ড, গবরগাড়া ও ছিলন্দিপাড়া গ্রাম নিয়ে ৯নং ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে বলে গেজেটে উল্লেখ রয়েছে। আগামী বছর ইউপি নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ইউনিয়ন ভাগাভাগি নিয়ে হাইকোর্টে ৩টি রিট হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হবে কি-না তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে অনেকেই। তার পরও নির্বাচন করতে হলে ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ অনেক কাজ বাকি আছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগ মনে করছে। বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়ন পুনর্গঠন, নবগঠিত নেহালপুর, গড়াইটুপি ইউনিয়ন হওয়ায় এলাকাবাসী খুশি।