চুয়াডাঙ্গা সদর ইউএনও’র হস্তক্ষেপে আলোকদিয়ার পীতম্বরপুরে বাল্যবিয়ে পণ্ড

বরকনেকন্যাপক্ষ ও কাজি লাপাত্তা : একজন আটক

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলোকদিয়া পীতম্বরপুরে বাল্যবিয়ে অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাল্যবিয়ে রোধে তড়িৎ হস্তক্ষেপে বিয়েবাড়ি থেকে বর-কনে, কন্যাপক্ষ ও কাজি লাপাত্তা হয়েছে। তবে বাল্যবিয়ে পড়ানো কাজির দু সহযোগীর একজনকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বাদ মাগরিব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান জানতে পারেন আলোকদিয়ার পীতম্বরপুরের রুম্পা (১৩) নামে এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে। এ সংবাদ পাওয়ার পর নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম ও পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। ইউএনও’র উপস্থিতি টের পেয়ে বর-কনে, কন্যাপক্ষ ও কাজি পালিয়ে যায়। তবে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজি আতিকুর রহমানের দু সহযোগীর একজন গ্রাম্য মসজিদের ইমাম নজরুল ইসলাম পালিয়ে যায়। অপর সহযোগী আব্দুর রহমানকে আটক করা হয়। বর-কনে, কাজি ও কনেপক্ষের কোনো লোকজন ঘটনাস্থলে না পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের পরিচালক নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত শ শ গ্রামবাসীর উদ্দেশে বাল্যবিয়ের কুফল বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, সামাজিক ব্যধি বাল্যবিয়ের কারণে যৌতুক, সন্তান প্রসবকালীন মাতৃ মৃত্যুর হার, নারীপাচার, বিয়েবিচ্ছেদ, নারী নির্যাতন মামলা, বিকলাঙ্গ শিশু জন্মদান, মায়ের স্বাস্থ্যহানি ও অপুষ্টি শিশু জন্মের হার বৃদ্ধি পায়। যারা বাল্যবিয়ে পড়ান, বাল্যবিয়ে পড়াতে সহায়তা করেন, সাক্ষী প্রদানকারী সবাই আইনের চোখে অপরাধী। এ ধরনের অপরাধ করলে তারা সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

গতকাল রাতে বাল্যবিয়ে পড়ানো অপরাধে কাজির সহযোগী আব্দুর রহমানকে আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নেয়া হলে গ্রামবাসী রাতে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাসের বাড়িতে ধরনা দেন। আসাদুল হক বিশ্বাস গ্রামবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমি কোনো সামাজিক অপরাধের সাথে জড়িতদের পক্ষে কথা বলতে পারবো না। নির্বাহী কর্মকর্তা সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বাল্যবিয়ে পড়ানোর মূলহোতাকে হাজির না করা হলে আটকৃত সহযোগীকে ছাড়া হবে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আলোকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আক্তাউর রহমান মুকুল, ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল হালিম, সাংবাদিক মনির উদ্দিনসহ স্থানীয় জনগণ এবং সদর থানা পুলিশের এসআই সাইদুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা।