নকল ও ভেজাল ওষুধ : শক্ত হাতে প্রতিরোধ প্রয়োজন

 

সারাদেশে এখন নকল ও ভেজাল ওষুধের ছড়াছড়ি। তা ছাড়া কমিশন লাভের আশায় চিকিৎসকদের একাংশ ভুঁইফোড় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মানহীন ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবনের জন্য লিখে দিচ্ছেন। দেশে ওষুধ উৎপাদনের সাথে জড়িত কোম্পানির সংখ্যা ২৭০’র বেশি। এর মধ্যে সর্বাধিক ৪০টি কোম্পানি মানসম্মত ওষুধ তৈরি করলেও অন্যদের উৎপাদিত ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

নকল ও মানহীন ওষুধ তৈরির সাথে জড়িতদের খুঁটির জোর এতোই বেশি যে, তাদের আইনের আওতায় আনাও কঠিন হয়ে পড়ে। এলাকার চিকিৎসকরা তাদের ব্যবস্থাপত্রে মানসম্মত কোম্পানির ওষুধ দিলেও, মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর ভরসা হাতুড়ে চিকিৎসকরা। তাদের কারণে মফস্বল এলাকার বাজারগুলো মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর দখলে বললে ভুল বলা হয় না। বাংলাদেশের ওষুধ ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানি হলেও এখন মানসম্মত কোম্পানির ওষুধ ব্যবহার করেও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কোম্পানির ওষুধও অবাধে নকল করছে সঙ্ঘবদ্ধ একাধিক চক্র। বাংলাদেশে নকল ও ভেজাল ওষুধ কী পরিমাণে তৈরি হয়, তার কোনো নির্দিষ্ট তথ্য সম্ভবত নেই। নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করার কাজে অনেক কোম্পানিও জড়িত আছে। বিভিন্ন ধরনের সিরাপ, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল নকল হচ্ছে। এর পাশাপাশি আছে নিম্নমানের ওষুধ তৈরির কারবার। অনেক ওষুধ ব্যবসায়ী দাদনের মতো করে ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিকে আগাম টাকা দিয়ে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে। এর আগে অনেক ট্যাবলেট, ক্যাপসুল পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সেগুলোর ভেতরে সাধারণ আটা-ময়দা ছাড়া কিছুই নেই। সিরাপের মধ্যে আছে শুধু রং। সরল বিশ্বাসে ওষুধ কিনে প্রতারিত হয় ক্রেতা। যেকোনো মূল্যে নকল ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত বন্ধ করতে হবে।

নকল ও ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারক এবং বিক্রেতা দেশ ও জাতির জন্য সন্ত্রাসীর চেয়েও বড় শত্রু। এদের প্রতিরোধ করা দরকার। নকল ও ভেজাল ওষুধ ক্যানসারের চেয়েও ভয়ঙ্কর। এ নকল ও ভেজালকারীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। ওষুধ প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে ভেজাল ও নকল ওষুধ থেকে জাতিকে রক্ষা করা অসম্ভব।