নতিডাঙ্গা এতিমখানা লিল্লাহ বোডিং ও হাফিজিয়া মাদরসার রসিদ হাতে ঘুরছে শিশু পথে পথে

স্টাফ রিপোর্টার: কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে চাঁদা আদায়ের রসিদ বই তুলে দিয়ে দয়া-দাক্ষিণ্য আদায় বন্ধ হয়নি। ঈদকে সামনে নিয়ে এতিমখানা লিল্লাহ বোডিং ও হাফিজিয়া মাদরাসার এক শ্রেণির পরিচালনা কমিটিসহ শিক্ষকেরা মেতে উঠেছেন। শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে এসব করানো হলেও প্রশাসনের তরফে তেমন কোনো পদক্ষেপই পরিলক্ষিত হচ্ছে না। গতকাল রোববার সকাল বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা নিউ মার্কেটের বিপরীতের একটি মার্কেটে এক শিশুকে চাঁদা আদায়ের রসিদ নিয়ে ঘুরতে দেখে অনেকেই এ মন্তব্য করেন।

সড়কের পাশে মাইক ভিড়িয়ে চাঁদা আদায় যেমন অবৈধ তেমনই, শিশু শিক্ষার্থীদের হাতপাততে শেখানোরও বৈধতা নেই। অথচ প্রকাশ্যেই বিভিন্ন মাদরাসা, এতিমখানা লিল্লাহ বোর্ডিঙের নামে ছাপানো চাঁদা আদায়ের রসিদ নিয়ে কোমলমতি শিশুদের ঘুরতে দেখা যায়। গতকাল চুয়াডাঙ্গা হাজরাহাটির এক ভ্যানচালক ঘ্যাটকল বিক্রেতার শিশুপুত্র আলমডাঙ্গার নতিডাঙ্গা এতিমখানা লিল্লাহ বোডিং ও হাফিজিয়া মাদরাসার রসিদ বই নিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। জেলা শহরের শহীদ আবুল কাশেম সড়কে ঘুরতে দেখে কয়েকজন দোকানি তাকে ডেকে বসান। আনুমানিক ৮ বছর বয়সী শিশুকে দিয়ে চাঁদা আদায় করানোর বিষয়টি হতবাক করে সচেতনমহলকে। জিজ্ঞাসাবাদে শিশু জানায়, তাকে এই রসিদ বই দিয়ে ১ হাজার টাকা তুলে নিয়ে মাদরাসায় দিতে বলেছে। মাদরাসায় এক হাজার টাকা দিলে আমাকে ৩শ টাকা দেবে বলেও জানিয়েছেন খাদেম। এ কথা শুনে শিশুর দিকে তাকিয়ে মায়া হয় অনেকের। সজল ফটোস্ট্যাটের স্বত্বাধিকারী অবশ্য কিছু টাকা তুলেও দেন।

শিশুকে দিয়ে টাকা তোলার বিষয়ে মোবাইলফোনে জানতে চাওয়া হলে ওই মাদরাসার সভাপতি মাহাবুল ইসলাম ভুল স্বীকার করে বলেন, ওকে আমরা বাজারে নয়, এদের আত্মীয়স্বজনের নিকট থেকে টাকা তুলতে বলেছিলাম। খাদেম মুরশেদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এতিমখানা চলে মানুষের দায়ায়। ওভাবে টাকা না তুললে ওরা খাবে কি?

যে এতিমখানা শিশু শিক্ষার্থীদের চাঁদা তুলে চালাতে হয়, সেই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা কে? এ বিষয়ে নতিডাঙ্গা গ্রামের কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেছেন, এতিমখানায় যে ক’জন ছাত্র আছে তাদের সকলেই গ্রামের বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়িতে খায়।