মাজেদুল হক মানিক: নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে মেহেরপুর গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ও কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে নির্মিত ভবনের রঙ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ও কাঠের দরজা বাঁকা হয়ে গেছে। উৎকোচের বিনিময়ে উপসহকারী শিক্ষা প্রকৌশলী শাহাউদ্দৌলা সীজুর নির্মাণ সম্পন্নপত্রে বিল উত্তোলন করেছেন ঠিকাদার। নিম্নমানের কাজের কথা স্বীকার করলেও উৎকোচ নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানের জন্য ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে মোট ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে। কুষ্টিয়া জোনের অধীনে গাংনীর উপসহকারী শিক্ষা প্রকৌশলী শাহাউদ্দৌলা সীজুর তত্ত্বাবধানে ভবনটি নির্মিত হয়। ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পান কুষ্টিয়ার মেসার্স সৈকত এন্টারপ্রাইজ। নিয়মানুযায়ী ফ্লোরে বালি ভরাট করে ভাইব্রেটরের মাধ্যমে কমপেকশন করা কথা থাকলেও তা করা হয়নি। দেয়া হয়েছে ৮/১ সিসি ঢালাই। উন্নতমানের সিমেন্ট যাতে ৯০ ভাগ ক্লিংকার রয়েছে সেটি ব্যবহার করা কথা থাকলেও ৬৫ ভাগ ক্লিংকার বিশিষ্ট নিম্নমানের সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
ভবনে ওয়েদার কোট ব্যবহার করা হয়নি। করা হয়েছে নিম্ন মানের রঙ। বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য ১৪ হাজার টাকা মূল্যের পিতলের তার ব্যবহার করার কথা থাকলেও চারশ টাকা মূল্যের নিম্ন মানের অ্যালুমিনিয়ামের তার ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সাথে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন মানের কাঠের দরজা। নিয়মানুযায়ী কাঁঠাল বা মেহগনি কাঠের দরজা দেয়া কথা থাকলেও অপরিপক্ক আমকাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাঠের দরজা অনেকাংশে বাঁকা হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উৎকোচ নিয়ে নিম্নমানের কাজ হওয়া স্বত্ত্বেও উপসহকারী শিক্ষা প্রকৌশলী শাহাউদ্দৌলা সীজু বিল ভাউচার স্বাক্ষর করে বিল উত্তোলনে সহায়তা করেছেন। ওয়ার্ক ওর্ডার অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে ছাড়পত্র দিয়েছেন ওই উপসহকারী প্রকৌশলী।
এ ব্যাপারে শাহাউদ্দৌলা সীজু জানান, ভবনটি নির্মাণে বেশ জটিলতা ছিলো তাই নিম্নমানের কাজ হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কিছু করা সম্ভব হয়নি। তবে উৎকোচ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।