গাংনীতে দিনমজুর কৃষক খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের : দুজন গ্রেফতার

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কেশবনগর গ্রামের দিনমজুর কৃষক হাসিবুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলার আসামি হিসেবে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতারকৃত দুজনকে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জানাজা শেষে হাসিবুলের লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল দুপুরে মরদেহ পৌঁছায় কেশবনগর গ্রামে। তাকে শেষ বিদায় দিতে আসা গ্রামাবাসীসহ আত্মীয়স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। চারদিকে শুধুই কান্নার রোল। বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন নিহতের পিতা-মাতা ও স্ত্রী। বিকেল তিনটার দিকে জানাজা শেষে মানিকদিয়া কবরস্থানে তার লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় মুসল্লিদের ঢল নামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসিবুলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মা সাহেরা খাতুন বিলাপ করছিলেন আর মুর্ছা যাচ্ছেন। তার অভিযোগ নির্দোষ ছেলেকে কেন মরতে হলো। ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন তিনি। ঘরের মেঝেতে হাসিবুলের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে অঝরে কাঁদছেন স্ত্রী ইসমত আরা। অল্প বয়সে তাকে বরণ করতে হলো বিধবার সাজ। শিশুকন্যার ভবিষ্যত নিয়েও তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ়।

এদিকে গতকাল বিকেলে গাংনী থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুস। ঘাতক দুখু মিয়াকে প্রধান আসামি করে আরো ৭ জনকে আসামি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে কেশবনগর গ্রাম থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার উজ্জল ও মিলনকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করবে পুলিশ। প্রধান আসামিসহ অন্যান্য আসামিরা যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তবে ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে তারা। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন জানান, গ্রামের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, শিশুদের ক্রিকেট খেলা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে দু পরিবারের লোকজনের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিবেশী দুখু মিয়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে হাসিবুলকে। তাকে প্রথমে গাংনী ও পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। রাতে তার মৃত্যু হয়। ওই রাতেই দুজনকে গ্রেফতারের পাশাশি ঘটনাস্থল থেকে সংঘর্ষের সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।