কেআইবি প্রথম কৃষিপদক প্রাপ্ত চুয়াডাঙ্গার উদ্ভাবক ও সফল কৃষক আসাদুল হক বিশ্বাস বললেন
স্টাফ রিপোর্টার: কেআইবি প্রথম কৃষিপদক প্রাপ্ত চুয়াডাঙ্গার উদ্ভাবক ও সফল কৃষক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস বলেছেন, ফসল ফলানো জমি তখনই কথা বলে যখন জমি পায় জমির ভাষা বোঝার মতো কৃষক। কৃষকের যে সন্তান মেধাবী ও শিক্ষিত তাকে কৃষিকাজের দায়িত্ব দেয়া হলে বা তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে দায়িত্ব নিলে অবশ্যই আবাদি জমির কথা শুনতে তথা বুঝতে পারবেন। বুঝবান কৃষকদের দিয়েই দেশের কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে খাদ্যে টেকসই বা স্থায়ী স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব।
চুয়াডাঙ্গা আলুকদিয়ার কৃতীসন্তান আসাদুল হক বিশ্বাস সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তিনি। অদম্য ইচ্ছে তাকে সফল ও উদ্ভাবক কৃষকের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। সারাদেশের মধ্যে তিনিই প্রথমবারের মতো কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনের কৃষিপদক-২০১৫ লাভ করেছেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার খামারবাড়ির ইন্সটিটিউশনের মিলনতায়নে আনুষ্ঠানিকভাবে পদক প্রদান করা হয়। পদক তুলে দেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ। উপস্থিতি ছিলেন ইন্সটিউশনের সভাপতি কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দীন নাছিম এমপি, মহাসচিব কৃষিবিদ মোহাম্মদ মোবারক আলীসহ অনেকে।
আসাদুল হক বিশ্বাসের রয়েছে বহু প্রতিষ্ঠান। বিশ্বাস এগ্রো কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। শ্রমিকদের পাশাপাশি তিনি নিজ হাতেও গরু খামারের গরুপালনে যেমন আন্তরিকত তেমনই তিনি বিশ্বাস মৎস্য খামারের পুকুরে মাছের খাবার ছিটিয়ে খুঁজে পান তৃপ্তি। তিনিই চুয়াডাঙ্গায় প্রথম পরিবেশ বান্ধব ইটভাটা গড়ে তুলে উদাহরণ সৃষ্টি করেন। ১৫টি ভেড়া দিয়ে যে ভেড়াখামার শুরু করেন, সেই খামারে এখন ভেড়া ভর্তি। আর পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি? প্রতিদিনই প্রায় ৪০ হাজার ডিম উৎপাদনের পাশাপাশি ৪০ হাজার বাচ্চা ফুটিয়ে দেশের খামারগুলোতে সরবরাহ করে চলেছেন স্বগৌরবে। পোল্ট্রি ফিড মিলের মূল কাঁচামাল ভুট্টা? তাও তারই নিজ জমিতে আবাদ করা। সেখান থেকেই জোগান হচ্ছে মশার কয়েল তৈরির কাঁচামাল। চমৎকার এসব আয়োজনের মধ্যদিয়ে তিনি শুধু আর্থিকভাবেই সফল নন, তিনি দেশের সফল কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার গৌরব বয়ে আনতে পেরে গর্বিতও বটে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়াস্থ বিশ্বাস টাউয়ারে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে চা চক্রের আয়োজন করে একান্ত আলাপচারিতায় বিস্তারিত বর্ণনা করে বলেন, দেশের মাটি সত্যিই কথা বলে। অবশ্য এ কথা শুনতে হলে গতানুগতিকধারার চাষাবাদ থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বের হতে হলে অবশ্যই কৃষকের যে সন্তান শিক্ষিত এবং মেধাবী তাকেই কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন। কারণ, শিক্ষিত মেধাবীরাই জমির ভাষা বুঝতে পারে। আমাদের দেশের কৃষকদের অধিকাংশই বংশ পরম্পরায় ফসল ফলিয়ে আসছেন। এতেই খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হচ্ছে। কৃষিকাজে শিক্ষা ও মেধার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে খাদ্য রপ্তানির মাধ্যমে টেকশই স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব।
আলাপচারিতার মাঝে সাংবাদিকদের আহ্বানের প্রেক্ষিতে তিনি চুয়াডাঙ্গায় যতো দ্রুত সম্ভব একটি কোল্ডস্টোরেজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার অগ্রযাত্রাকে আরো সাফল্য ভরাতে সকলের নিকট দেয়া প্রার্থনা করে বলেন, আমি লেখাপড়া শেষ করে পিতার উৎসাহেই কৃষিকাজে হাত দিয়ে আজ সফল। এ সফলতার আড়ালে অবশ্যই এলাকাবাসীর অবদান অনেক।