গাঁজাচাষি মফিজ পলাতক : স্ত্রী সুন্দরীকে জেলহাজতে প্রেরণ

দামুড়হুদার গোপালপুরে ডিবি পুলিশের অভিযান : ৫০টি গাঁজা গাছ উদ্ধার

 

দামুড়হুদা/নতিপোতা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৬ লাখ মূল্যের ৫০টি গাঁজা গাছ উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গত রোববার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খালিদ হাসানের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম উপজেলার গোপালপুরের মফিজ উদ্দীনের বাড়ির পেছনের একটি বাগানে অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে প্রায় দু কাঠা জমির ৫০টি গাঁজা গাছ উদ্ধার করেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাঁজাচাষি মফিজ পালিয়ে গেলেও পুলিশ গাঁজাচাষে সহায়তাকারী হিসেবে তার স্ত্রী সুন্দরী খাতুনকে গ্রেফতার করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার (চলতি দায়িত্বে) গোলাম বেনজীর ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ফারুক হোসেন। এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খালিদ বাদী হয়ে গাঁজাচাষি মফিজ ও তার স্ত্রী সুন্দরী খাতুনকে আসামি করে দামুড়হুদা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল সোমবার গ্রেফতারকৃত সুন্দরী খাতুনকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের শবজেল মণ্ডলের ছেলে মফিজ উদ্দীন ওরফে মফে (৫০) দীর্ঘদিন ধরে গোপনে বাড়ির পেছনে গাঁজাচাষ করে আসছিলো। গত রোববার বিকেল ৪টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খালিদ, এএসআই জগদীশ ও এএসআই রফিকসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোপালপুরের মফিজ উদ্দীনের বাড়ির পেছনের একটি বাগানে অভিযান পরিচালনা করেন। সেখানে প্রায় দু কাঠা জমির ৫০টি পূর্ণবয়স্ক গাঁজাগাছ উদ্ধার করেন। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাঁজাচাষি মফিজ পালিয়ে গেলে পুলিশ গাঁজাচাষে সহায়তাকারী হিসেবে তার স্ত্রী সুন্দরী খাতুনকে গ্রেফতার করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার (চলতি দায়িত্বে) গোলাম বেনজীর ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ফারুক হোসেন। তাদের সহায়তা করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান দামুড়হুদা থানার টহলদল। স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ ওই ৫০টি গাঁজাগাছ কেটে গাছসহ গাঁজা চাষির স্ত্রীকে থানায় নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে প্রতিবেশীরা জানায়, মফিজ গাঁজাচাষ করেন তা আমরা কেউই জানতাম না। তবে রাতে এক ধরনের মিষ্টি গন্ধ পেতাম। প্রতিবেশীরা আরো বলেন, মফিজের অভাব অনটনের সংসার। তার ১ মেয়ে ও ২ ছেলে। মেয়েটির বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই। দু ছেলের মধ্যে বড় ছেলেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্র এবং ছোট ছেলেটি গ্রামের দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতেই হয়তো গোপনে ওই গাঁজাচাষ করতো।

এ বিষয়ে ওসি ডিবি ফারুক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতেই আমরা তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করি। বাড়ির পেছনে একটি বেড়ার দিয়ে ঘেরা বাগানের মধ্যে ওই গাঁজাচাষ করা হয়েছে। যা বাইরে থেকে কেউ দেখতে পাবে না এবং মফিজের বশতঘরের পেছনে একটি দরজা আছে। ওই দরজাটিই বাগানের যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মফিজ পালিয়ে গেলে আমরা তার স্ত্রীকে আটক করি। উদ্ধারকৃত গাঁজার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা বলেও তিনি জানান। এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এআই খালিদ বাদী হয়ে গাঁজা চাষি মফিজ ও তার স্ত্রী সুন্দরী খাতুনকে আসামি করে ওই দিন সন্ধ্যায় দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। গতকাল সোমবার গ্রেফতার করে সুন্দরী খাতুনকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আফজাল হোসেন বলেন, গাঁজাচাষি মফিজকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।