হামলা সংঘর্ষ ককটেল বিস্ফোরণ

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে অনাবিল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ভাংচুর ও অগি্নসংযোগ করে হরতাল সমর্থকরা। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। এর আগে দুপুরে পোস্তগোলা এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং একটি লেগুনা ভাংচুর করা হয়। রামপুরার পলাশবাগে পর পর ছয়টি হাতবোমার বিস্ফোরণ, সেগুনবাগিচায় একটি, চকবাজারের এরশাদ নগরে তিনটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় শিবির কর্মীরা। সন্ধ্যার আগে মগবাজার মোড়ে টায়ারে আগুন দিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে জামায়াতের কর্মীরা।

সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের সাথে সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩৪ জন আহত হয়েছে এবং ৩৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে জামায়াত-শিবিরের সাড়ে তিন শতাধিক কর্মী গ্রেফতার হয়েছে। এক বিবৃতিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নেতাকর্মী আহত ও গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

রায়ের পর সিলেটে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলা চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এ নিয়ে দু পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা অন্তত ৩০টি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। ইট-পাটকেল ও পুলিশের রাবার বুলেটের আঘাতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। সন্ধ্যার পর নগরীর পাঠানটুলা ও মীরাবাজার এলাকায় জামায়াত কর্মীরা ঝটিকা মিছিল করে। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।

রায়ের প্রতিবাদে বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ বাজারের মনাকষা মোড়ে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে পুলিশ-বিজিবিসহ ২০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। জামায়াত দাবি করেছে, পুলিশের গুলিতে তাদের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদিকে ভোলাহাট উপজেলার মহবুল্লাহ কলেজ মোড় এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে ভ্যানচালকসহ ৪ জন আহত হয় ।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদ কনটেইনার রোডে গতকাল বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করেছে বিএনপি কর্মীরা। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করে পালানোর সময় বিএনপি কর্মী সোয়েব মোল্লা রনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বগুড়ায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা শহরতলির সাবগ্রাম এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। এছাড়া খান্দার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। জেলার শেরপুর উপজেলায় তারা বিক্ষোভ মিছিল করে।

নিজামীর ফাঁসির রায়ের পর সেনবাগ উপজেলার সেবারহাট বাজার ও ছমিরমুন্সিরহাট বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে এবং অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ।

রায়কে প্রত্যাখ্যান করে এবং হরতালের সমর্থনে গতকাল লক্ষ্মীপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। এ সময় আলিয়া মাদ্রাসা এলাকায় তারা তিনটি লেগুনা ও দুটি অটোরিকশা ভাংচুর করে। এছাড়া উত্তর তেমহুনী এলাকায় দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা।

রায় ঘোষণার পর সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা জঙ্গি মিছিল বের করে। মিছিলটি বাড়বকুণ্ড বাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দিকে এলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ ৫৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।