টিকিটের জন্য যুদ্ধ : ভোগান্তির অভিন্ন চিত্র

ঈদ ও পূজা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

 

ঢাকা অফিস: বরাবরের মতোই উপচেপড়া ভিড়, টিকিট পেতে বিলম্বের অভিযোগ আর ভোগান্তির মধ্যদিয়ে ঈদ-পূজায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। মহাসড়কে যানজট, দুর্ঘটনা ও পথের ভোগান্তি এড়াতে ঈদে ঘরমুখো মানুষের প্রথম পছন্দ থাকে ট্রেন। এবারো তাই ভোর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের অপেক্ষা শুরু হয়। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় যখন টিকিট বিক্রি শুরু হয়, টিকিট প্রত্যাশীদের লাইন ততোক্ষণে বিশাল আকার ধারণ করে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টিকিট পেয়ে অনেকের মুখে যেমন হাসি দেখা গেছে, তেমনি শোনা গেছে টিকিট বিক্রির ধীরগতি নিয়ে আপত্তি। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে কমলাপুর স্টেশনে অপেক্ষা করা ময়মনসিংহের যাত্রী মোকসেদ রহমান বলেন, রাস্তার যে অবস্থা, আতঙ্কিত ছিলেন, টিকিট পাওয়ার পর স্বস্তি পেয়েছেন। তাপানুকূল (এসি) আসন ও বার্থ টিকিট না পাওয়ার অভিযোগও করলেন টিকিট প্রত্যাশী অনেকে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের মহাপরিচালক তফাজ্জল হোসেন বলেন, কেবিন বা এসি প্রথম শ্রেণির টিকিট সীমিত হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তবুও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। টিকিট বিক্রির সময় সকাল ৮টা থেকে করা হবে কি-না জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মনসুর আলী সিকদার সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি নিয়মে ৯টা-৫টা টিকিট বিক্রি হয়। যাত্রীরা অভিযোগ করলে সময় পরিবর্তনের চিন্তা করা হবে।

কমলাপুর স্টেশনে মোট ১৫টি কাউন্টারে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ হাজার অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন এক লাখ ৮০ হাজার টিকিট বিক্রি হলেও ঈদ-পূজা সামনে রেখে প্রতিদিন সব ট্রেন মিলিয়ে দু লাখ ৫০ হাজার টিকিট বিক্রি করা হবে। প্রতিবারের মতো এবারো একজনকে চারটির বেশি টিকিট দেয়া হবে না। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীর ছুটি আগামী ৪ অক্টোবর। এর একদিন পর ৬ সেপ্টেম্বর মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব কোরবানির ঈদ।

৫ থেকে ৭ অক্টোবর ঈদের ছুটি হলেও ৩-৪ অক্টোবর শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে।
শুক্রবার প্রথম দিন কমলাপুর থেকে ঈদের ৫ দিন আগের টিকিট বিক্রি হয়েছে। রেল মহাপরিচালক তফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ধারাবাহিকভাবে ১ থেকে ৫ অক্টোবরের টিকিট বিক্রি হবে। আর ৩ অক্টোবর পাওয়া যাবে ৭ তারিখের ফিরতি টিকিট।

ই-টিকেটিং নিয়ে নেই প্রচারণা: রেলের ইলেক্ট্রনিক টিকেটিং (ই-টিকেটিং) সেবা সম্পর্কে কোনো প্রচার-প্রচারণা নেই। এ নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিট নিতে আসা যাত্রীদের অভিযোগের শেষ নেই। যাত্রীরা জানান, স্টেশনে দেখা যাচ্ছে মোবাইল টিকেটিং কাউন্টার। অন্য কাউন্টারগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকলেও ই-টিকেটিং কাউন্টার একেবারে ফাঁকা। লাইনে না দাঁড়িয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ই-টিকেটিং এর মাধ্যমে মোবাইল কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা।

রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. খায়রুল বশীর রেলের ই-টিকেটিং সম্পর্কে অনেকেই জানেন দাবি করে বলেন, ই-টিকেটিং এর মাধ্যমে অনেকে টিকিট সংগ্রহ করছেন। তবে সংখ্যাটা কিছুটা কম।