চুয়াডাঙ্গার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচনকে ঘিরে আ.লীগের দু প্যানেলের মধ্যে বিরাজ করছে উত্তেজনা

প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাড়িতে গিয়ে দেখানো হচ্ছে ভয়ভীতি : নির্বাচন বানচালের আশঙ্কা

 

স্টারিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদরের খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বিবার্ষিক অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচনের আর মাত্র দু দিন বাকি। বিএনপি এবং জামায়াতের কোনো প্রার্থীকে ভোট করতে না দেয়ায় স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মীরা ৫টি পদের বিপরীতে ১০ জন প্রার্থী নেমেছে ভোটযুদ্ধে। এ নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতার লড়ায়ে স্থানীয় আ.লীগ সমর্থিত দুটি প্যানেল চালিয়ে যাচ্ছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে করছে ভোটভিক্ষা। নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই দুটি প্যানেলের কাদা ছুড়াছুড়িতে বিরাজ করছে উত্তেজনা। অভিযোগ উঠেছে সাবেক সভাপতি আ. মতিনের প্যানেল পরাজিত হওয়ার আশঙ্কায় শিক্ষক প্রতিনিধি ইয়াসমিনের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে দিয়েছে মহড়া। প্রতিদ্বদ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য দেখানো হয়েছে ভয়ভীতি।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ৫টি পদের বিপরীতে স্থানীয় আ.লীগ দুটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে ভোটযুদ্ধে মাঠে রয়েছেন ১০ জন প্রার্থী। একটি প্যানেলে রয়েছে আব্দুল ওহাব মণ্ডল (চেয়ার), আব্দুর শুকুর (ছাতা), মমিনুল ইসলাম মমিন (মোরগ), আনিছুর রহমান (গরুরগাড়ি) ও আকলিমা বেগম (কলস)। অপর প্যানেলে রয়েছেন- নজরুল ইসলাম (আনারস), ছানোয়ার হোসেন (ফুটবল), শহিদুল ইসলাম (হাতপাখা), শরিফুল ইসলাম (মই) ও ময়না খাতুন (মাছ) প্রতিক নিয়ে উভয় প্যানেলে হ্যান্ডবিল ছপিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই দু পক্ষের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা।

অভিযোগ উঠেছে, সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন প্যানেলের পরাজয় নিশ্চিত ভেবে হাঁটতে শুরু করেছে বাঁকা পথে। দেখাচ্ছে ক্ষমতার মহড়া। এ ক্ষমতার নগ্ন বহির্প্রকাশ ঘটেছে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে। আব্দুল মতিন পক্ষের লোকজন বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক প্রতিনিধি প্রার্থী ইয়াসমিন পারভীনের সরোজগঞ্জের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার জন্য গতকাল বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। শিক্ষক ইয়াসমিন বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। ঘটনার পর থেকেই চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে শিক্ষক ইয়াসমিন ও তার পরিবারের লোকজনের। সচেতনমহলের দাবি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসা জরুরি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট ২০১৪ তারিখে নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনী তফশিল ঘোষণা করা হয়। সেই লক্ষ্যে গত ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর ছিলো মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমাদানের দিন। ৫টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র বিক্রি হয় ১২টি। এর মধ্যে ৪ জন পুরুষ অভিভাবক সদস্যের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেন ১২ জন এবং ১ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেন ২ জন। যাদেরকে ভোটারদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে হবে। ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ৫শ ৪১ জন। অন্যদিকে দুজন পুরুষ শিক্ষক প্রতিনিধির জন্য মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন ৪ জন এবং ১ মহিলা শিক্ষিক প্রতিনিধির জন্য ২ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। ৪ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র বাছায়, ৭ সেপ্টেম্বর প্রত্যাহার ও ৮ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করা হয় এবং আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আব্দুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভীত্তিহীন। আমাকে ঘায়েল করার জন্য প্রতিপক্ষরা পাঁয়তারা চালাচ্ছে।