অন্যের জমির মালিক সেজে বিক্রি এবং

 

 

একজনের জমি অন্যজন বিক্রি করে কীভাবে? পরিকল্পিতভাবে জাল দলিল প্রস্তুত করেই শুধু নয়, সাব রেজিস্ট্রার অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে। ঝিনাইদহের একটি চক্রের মুখোশ খুলেছে। চুয়াডাঙ্গাতেও বেশ কয়েকটি চক্র রয়েছে। এদের মধ্যে কলোনিপাড়ার এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অন্যের জমি ব্যাংক কর্তার দেখিয়ে ঋণ নেয়ার অভিযোগসহ বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে। অন্যের জমি দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া যায়? এ জন্যই তো কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলেন, সব সম্ভবের দেশ। সাবধান!

নিজে অন্যের জমির মালিক সেজে বিক্রি কোনো একক ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। জাল দলিল প্রস্তুত করলেই জমি বিক্রি করা যায় না, খারিজসহ অনেক কিছুই লাগে। এসব না দেখে জমি রেজিস্ট্রি মানে সাব-রেজিস্ট্রার অসাধু। যদি দেখানো হয়েই থাকে তা হলে সেগুলোও জাল করতে হয়েছে। এতেই প্রতীয়মান হয় জমি জালকারীদের সাথে থাকে উপজেলা ভূমি অফিসসহ সাব-রেজিস্ট্রারের কিছু অসাধু ব্যক্তির যোগসাজশ। আর দলিল লেখক? তাদের সকলকেই তো আর সাধু বলা যায় না। সঙ্ঘবদ্ধ অসাধু চক্র অন্যের জমির মালিক সেজে জমি বিক্রির আগে ক্রেতাদের তা দেখাতেও নিয়ে যান। এ জন্য তাদেরকে খোঁজ নিতে হয় ওই মৌজার জমির মালিক সেখানে থাকেন কি-না। দূরে থাকা ব্যক্তিদের জমি জাল করে বিক্রির সুযোগ নেয় ওরা। তা ছাড়া সমাজের দুর্বল ব্যক্তিদেরও বিপাকে ফেলার জন্য জাল দলিল করে প্রতারকরাও মামলা ঠুকে হয়রানির মধ্যে ফেলে অর্থ হাতানোর পাঁয়তারা করে। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমি? চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি পুরোটাই তো হজম করতে চেয়েছিলো একটি চক্র। প্রতিবাদ প্রতিরোধের মুখে তা ভেস্তে গেলেও সেই চক্রের বর্তমান অপতৎপরতা সম্পর্কে বোঝা কঠিন। কারণ জমির দলিল জাল করে হাতিয়ে নেয়া চক্রের সুদূরপ্রসারী গোপন নকশা অনেকের পথেও বসিয়েছে। তা ছাড়া এ ধরনের চক্রের সাথে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদেরও যোগসূত্র থাকে। অন্যের জমি দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ। ঋণদাতা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের যোগসাজশ ছাড়া এটাও অসম্ভব।

ঝিনাইদহে অন্যের জমির মালিক সেজে বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া একটি চক্রের সন্ধান মিলেছে। চক্রের হোতাদের কয়েকজনের মুখোশও খুলেছে। তাদের একজনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা মসজিদপাড়ায়। তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। চক্রের সকলকে ধরে আইনে সোপর্দ করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে সাধারণ মানুষের হয়রানি বাড়বে। জমির ক্রেতাদেরও সস্তায় পেয়ে হাতি গেলার মতো না করে জমি ক্রয়ের সময় যাচাই-বাছাই করেই নিতে হবে। ভূমি সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি কার্যালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।