আগামী অর্থবছরে কালোটাকা শাদার সুযোগ নেই

বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী অর্থবছরে কালোটাকা শাদা করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেনঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানীস্মৃতি মিলনায়তনে বাজেট-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নেরজবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে ৩৪০ কোটি কালোটাকাশাদা হয়েছে। এ থেকে সরকার মাত্র ৩৪ কোটি টাকা কর পেয়েছে। তাই এই সুযোগদেয়ার প্রয়োজন নেই।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জমি বিক্রির মাধ্যমেসবচেয়ে বেশি কালোটাকার জন্ম হয়। এটা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তানিয়ে চিন্তাভাবনা করা দরকার।’ এর আগে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকারবিষয়ে কিছুই না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভুলে বাদ পড়ে গেছে।’ কালোটাকাশাদা করার বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনবলেন, ‘বর্তমানে আবাসন খাতে, ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ ও জরিমানা দিয়েযেকোনো অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করা যায়। এটি রাখা না-রাখা নিয়ে আলোচনা হবে।২৯ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাশের আগেই বিষয়টি সুরাহা হয়ে যাবে।’ তিনিবলেন, পুঁজিবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

আমাদের অর্জন অসাধারণ: আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘সবাই বলছেন, বাজেটউচ্চাভিলাষী। আমি তো প্রথম বছর (২০০৯) থেকেই উচ্চাভিলাষী। প্রথম থেকেইআমাদের অর্জন অসাধারণ। ব্যয় করার সামর্থ্য আছে। এটাই আমাদের সরকারেরচরিত্র। এটি বজায় রাখা হবে।’ মূল্যস্ফীতি বাড়লেও করমুক্ত আয়সীমা কেনবাড়ানো হলো না?-এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘করমুক্ত আয়সীমাকোনো দেশেই ঘন ঘন পরিবর্তন হয় না। আমি চেয়েছিলাম ১০ বছরের জন্য একটিনির্দিষ্ট কাঠামো করতে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী রাজি না হওয়ায় সেটি সম্ভবহয়নি।’

আমদানি করা মুঠোফোনে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আরোপেরবিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের ১৫-১৬ কোটি মানুষের মধ্যে মোবাইল ব্যবহারকরে ১০ কোটি। আর যাঁরা মোবাইল ব্যবহার করেন তারা এই ক্ষুদ্র কর আরোপেআপত্তি করবেন না। এটি খুব সহজেই আদায় করা সম্ভব। এ বিষয়ে এনবিআরচেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে এখন সংযোজিত মোবাইল ফোনসেটে ১৫ শতাংশ মূসক থাকলেও আমদানি পর্যায়ে ছিলো না। এ বৈষম্য দূর করতেইআমদানি করা মুঠোফোনে মূসক বসানো হয়েছে।কৃষিতে বরাদ্দ কমানো হয়েছেকেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি খাত ব্যক্তি মালিকানাধীন।শিল্প খাতেও আলাদা করে বরাদ্দ নেই। কৃষিতে আমরা যা দেই, তা হলো ভর্তুকি। তাছাড়া কৃষিতে কোনো সমস্যা হলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় সরকার।’

যা চেয়েছি,তা-ই পেয়েছি: মতিয়া: প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিতে বরাদ্দেরবিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যাচেয়েছি, তা-ই পেয়েছি। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন অনেক টাকাভর্তুকি দিয়ে সারের দাম কমানো হয়। সারের দাম এখন স্বাভাবিক থাকায় আগেরচেয়ে বেশি ভর্তুকি দিতে হচ্ছে না। আর তাই বরাদ্দ বাড়ছে না।’ তিনি বলেন, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ২৫ শতাংশ ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে, কৃষিঋণের সুদ ১১ থেকেকমিয়ে ৮ শতাংশ এবং বিভিন্ন ধরনের বীজের আমদানি শুল্ক ৮ থেকে কমিয়ে ৪শতাংশ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে কৃষি খাত ছোট হচ্ছে না, বরং চারদিক থেকেসাহায্য করে একে সমৃদ্ধ করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেনতথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পরিকল্পনামন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ওপরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউররহমান, অর্থসচিব ফজলে কবির, পরিকল্পনাসচিব ভূঁইয়া শফিকুল ইসলাম। মঞ্চে নাথাকলেও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।