আলমডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী পাবলিক লাইব্রেরি দীর্ঘদিন বন্ধ : দেখার কেউ নেই

 

রহমান মুকুল: আলমডাঙ্গা উপজেলার একমাত্র ঐতিহ্যবাহী পাবলিক লাইব্রেরি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। লাইব্রেরির নিয়মিত সদস্যরা বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

আলমডাঙ্গা উপজেলার একমাত্র লাইব্রেরি হচ্ছে আলমডাঙ্গা পাবলিক লাইব্রেরি। উল্লেখযোগ্য বইয়ের সম্ভারে সমৃদ্ধ এ লাইব্রেরি। ঐতিহ্যবাহী এ লাইব্রেরিটির দরজা পাঠকদের জন্য বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বছরের পর বছরব্যাপি এ বন্ধাত্ব ক্রিয়াশীল। ফলে পাবলিক লাইব্রেরির নিয়মিত সদস্য বা পাঠকেরা অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা এ সমৃদ্ধ লাইব্রেরির বই পড়ার সুবিধা থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত। এমনিতেই আমাদের সমাজে বই পড়ার প্রচলন সাংঘাতিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। সত্যিকার অর্থে জ্ঞানার্জন কিংবা সাহিত্য রস আহরণের জন্য এখন আর তেমন কেউ বই পড়ে না বললেই চলে। বন্ধ্যা এ সময়েও কেউ কেউ প্রকৃত জ্ঞানার্জন কিংবা সাহিত্য চর্চার তাগিদে লাইব্রেরিতে যাওয়া আসা করেন। আশার কথা হলো এদের সংখ্যা নেহায়েত কম না। প্রকৃত জ্ঞান ও সাহিত্য পিপাসু মানুষিকতা সৃষ্টিতে সকল সময়ে লাইব্রেরি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জ্ঞানের ক্ষুধা মেটানোর একমাত্র স্থান হলো লাইব্রেরি। বেশ কয়েক বছর ধরে আলমডাঙ্গা পাবলিক লাইব্রেরি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতঃপূর্বে একাধিকবার পত্র পত্রিকায় লেখালেখিও হয়েছে। কিন্তু অজানা কারণে লাইব্রেরিরদ্বার উন্মুক্ত করা হচ্ছে না। লাইব্রেরির নিয়মিত পাঠকরা বই পড়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফলে তাদের দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা পাঠাভ্যাস নষ্ট হচ্ছে। ফলে তাদের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক পাঠক বই পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে।

কিন্তু কাদের বা কোনো গোষ্ঠির স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে এ জ্ঞানগৃহের দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাব মেলে না। পাবলিক লাইব্রেরিটি উপজেলা চত্বরে অবস্থিত। প্রতিদিন বন্ধ এ লাইব্রেরির সামনে দিয়ে অনেক জন প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের নিত্য আসা-যাওয়া। প্রায়ই উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ একাধিক উচ্চ শিক্ষিত কর্মকর্তা এ বন্ধ লাইব্রেরির সামনে দিয়ে চলাচল করেন। শিক্ষিত ও উপযুক্ত নাগরিক গড়ে তোলার দায়িত্ব তাদের ওপরই ন্যাস্ত। অথচ কোনো বিবেচনায় এ জ্ঞানগৃহের দরজা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত? বই পড়তে আগ্রহী প্রজন্মের জন্য কী কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাবলিক লাইব্রেরি?

এ ব্যাপারে যাদের দেখভাল করার দায়িত্ব, তাদের ক্রমাগত অবহেলা ও অবিমৃশ্যকারিতায় পাঠপ্রিয় প্রজন্মের দূর্ভাগ্যের পরিধি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। পাঠপ্রিয় প্রজন্মের প্রতি দায়িত্ব পালনের কথা বিবেচনা করে বন্ধ পাবলিক লাইব্রেরি অর্গলমুক্ত করতে কেউ কি এগিয়ে আসবেন না?