অনিশ্চয়তা কাটিয়ে যতো দ্রুত সমাধান মিলবে ততোই মঙ্গল

‌কোনটি রাজনৈতিক নৈরাজ্য, কোনটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস? তা নিয়ে বিতর্কের চেয়ে বিরাজমান অস্থিরতা নিরসনে দ্রুত বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নেয়াই শ্রেয়। জরুরিও। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা কোনো সভ্য দেশের যেমন রাজনৈতিক আন্দোলন কর্মসূচি হতে পারে না, তেমনই বিচারবহির্ভূত হত্যারও মহোৎসব চলতে পারে না।

অবশ্যই এক সময় ক্রসফায়ার সন্ত্রাস কবলিত জনপদে জনসমর্থিত ছিলো। কারণ তখন উদ্দেশ্য ছিলো সন্ত্রাস দমনের মধ্যদিয়ে জনমনে স্বস্তি দেয়া। এখন? পূর্বের উদ্দেশে চিড় ধরেছে বলেই সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইভাবে লাগাতার অবরোধ, হরতাল আহ্বান করে বোমাবাজিসহ সাধারণ মানুষকে পেট্রোলবোমায় পুড়িয়ে হত্যাও বিরূপ সমালোচিত। এ ধরনের নৈরাজ্যের কাছে নতিস্বীকার মানে যেমন সন্ত্রাসের কাছে রাষ্ট্রের আত্মসমর্পণ, তেমনই ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডও আত্মঘাতীর শামিল। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থারই কোনো কোনোটির পরিচয়ে কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর হদিস মিলছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক পর্যায়ে লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে। এতে কি আস্থার সংস্থাগুলো আস্থাহীনতার ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে না? ঝিনাইদহে দু যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের সদস্য ও পুলিশের যে বক্তব্য তাতে সাধারণ মানুষ শুধু বিভ্রান্তই হয়নি, শঙ্কিতও হয়ে পড়েছে। কারণ অপহরণের সময় যে পরিচয় দেয়া হয়েছে সে পরিচয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদেরই একটি সংস্থা। ডিবি পরিচয়ে অপহরণের পর অপহৃতদের সুহালে উদ্ধার দুরস্ত, পাওয়া গেলো লাশ। এটা কি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের প্রতি আস্থার ওপর আঘাত নয়?

ওসব বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা উচিত। ভোটাধিকার নাকি গদি দখল? ক্ষমতায় টিকে থাকা নাকি সংবিধান রক্ষা? কোনোপক্ষেরই যুক্তি যখন কম নেই, তখন আমজনতার দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কি থাকে? দেশবাসী চায় স্বস্তি। চরম অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা কাটিয়ে যতো দ্রুত সমাধান মিলবে ততোই মঙ্গল।