মেহেরপুরে আয়ার স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ

ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর হাতিয়ে নিলেন অর্থ

মেহেরপুর অফিস: আয়ার স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ১৭ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন মেহেরপুর সদর ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর মফিজুর রহমান। প্রতিকার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আয়া নিমতারা। অপরদিকে নৈশপ্রহরীকে শারীরিকভাবে লঞ্ছিত, ভুয়া যাতায়াত বিল ও শিক্ষক প্রশিক্ষণের অর্থ-উপকরণ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ইন্সট্রাক্টরের বিরুদ্ধে।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, মেহেরপুর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নিমতারা খাতুন ২০০৮ সাল থেকে মেহেরপুর ইউআরসিতে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। বিষয়ভিত্তিক ব্যাচের প্রশিক্ষণের সাপোর্ট সার্ভিস বাবদ ১৬ হাজার ৪৭৩ টাকা পাওনা নিমতারা খাতুনের। নিমতারা টাকার জন্য দীর্ধদিন ধরে ইন্সট্রাক্টর মফিজুর রহমানের কাছে ঘুরছেন। তাকে টাকা না দিয়ে ভুয়া স্বাক্ষর বিলে টাকা উত্তোলন করেন মফিজুর। কিডনী রোগী স্বামীর চিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন হলেও অর্থ আত্মসাতকারী মফিজুর রহমানের কর্ণপাত হয়নি। নিরুপায় হয়ে সম্প্রতি মেহেরপুর পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট বরাবর একটি আবেদন করেছেন নিমতারা। জানতে চাইলে নিমতারা বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে বাচার জন্য ইন্সট্রাক্টর আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় হুমকিও দিচ্ছেন তিনি। এদিকে এ অফিসের নৈশপ্রহরী বাদলউজ্জামান ইন্সট্রাক্টরের বিরুদ্ধে পিটিআই সুপারিনটেনডেন্টের কাছে গত ২৯ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বকেয়া টাকা না দেয়ার অভিযোগ করেছেন বাদলউজ্জামান। অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুর প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সুপারিনটেনডেন্ট মাহফুজা খাতুন বলেন, বাদলের সাথে আপস করে দিয়েছি। তবে নিমতারার বিষয়টি কি হয়েছে তা আমি জানি না। এদিকে নৈশপ্রহরী বাদলউজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ইন্সট্রাক্টর মফিজুর রহমান। এ বিষয়ে নৈশপ্রহরী বাদলউজ্জামান বলেন, আমি তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছি তা ঢাকতেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে ইন্সট্রাক্টর মফিজুর রহমান বলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ করেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরে প্রাথমিক শিক্ষকের দুই ব্যাচে ৬০ জনের ৬ দিন করে প্রশিক্ষণ করায় ইউআরসি। প্রশিক্ষনার্থী শিক্ষকের একটি করে ব্যাগ বাবদ ৫০০ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষকদের ব্যাগ দেয়া হয়নি। প্রশিক্ষণের কিছুদিন পর থেকে ১৫০-২০০ টাকা দরের নি¤œমানের ব্যাগ ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে শিক্ষকদের হাতে। যা নিয়ে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে এ অভিযোগও অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ইন্সট্রাক্টর মফিজুর রহমান। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট।