গাংনীর হাড়িয়াদহে দুই কিশোর নির্যাতনকারী সুজনের গ্রাম্য সালিসে সাজা

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর হাড়িয়াদহ গ্রামে দুই কিশোরকে বেধড়ক মারপিটকারী সুজন হোসেনকে গ্রাম্য সালিসে সাজা দেয়া হয়েছে। ৫ বেত্রাঘাত, ৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ জীবনে এমন কাজ আর না করার মুচলেকা দিয়ে তাকে এ দফায় মাফ করেছে গ্রামবাসী। গতকাল বুধবার সকালে মাঠে ঘাস কাটার সময় এসএসসি পরীক্ষার্থী কিরণ ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কদর আলীকে বেধড়ক মারপিট করে একই গ্রামের সুজন হোসেন। আহত দুজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাড়িয়াদহ গ্রামের আশরাফ উদ্দীনের ছেলে কিরণ (১৬) ও আমির আলীর ছেলে কদর আলী (১২) গতকাল সকালে গ্রামের বেনাগাড়ী মাঠে সুজন হোসেনের বেগুনক্ষেতে ঘাস কাটতে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষেতমালিক সুজন হোসেন লাঠিপেটা করে কিরণ ও কদরকে। খবর পেয়ে গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে আত্মগোপন করে সুজন। আহত দুই কিশোরকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ঘাস কাটা কেন্দ্র করে মারপিটের বিষয়টি জানাজানি হলেও এর অন্তরালে রয়েছে সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচন। আহত দুই কিশোরের পরিবার বিএনপি সমর্থক হলেও তারা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। বিএনপি কর্মী সুজন হোসেন বারবার তাদেরকে দলের পক্ষে ফেরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সফল হয়নি। নির্বাচনের পক্ষ নেয়ার বিষয়ে প্রতিশোধ নিতেই সুজন তাদেরকে মারধর করেছে।

এদিকে শিশু-কিশোর নির্যাতনের বিষয়টি গ্রামের মানুষের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করে। প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছিলো গ্রামবাসী। শেষ পর্যন্ত গ্রাম্য সালিসে গতকালই বিষয়টি মীমাংসা হয়। বিকেলে গ্রামের মকছেদ আলীর বাড়ির পাশে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে সালিসসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিচারে সুজনকে ৫টি বেত্রাঘাত, আহত দুজনের চিকিৎসা খরচের জন্য ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও মারধরের সময় কিরণের মোবাইলফোন ভেঙে যাওয়ায় তা কিনে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন সালিসপতিরা। সালিস মেনে নিয়ে এ দফায় রেহাই পায় সুজন। সালিসের মধ্যে সুজনের চাচা ইছাহক আলী বেত্রাঘাত কার্যকর করেন। তবে এ বিষয়ে কোনো মামলা করা হবে না বলে জানিয়েছেন আহত দুজনের পরিবারের অভিভাবকরা।