রোহিঙ্গা নারীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি

স্টাফ রিপোর্টার: মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগ-দুর্দশা সরেজমিন প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি আমিন এরদোয়ান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শনের সময় এক মধ্যবয়স্ক রোহিঙ্গা নারী কাঁদতে কাঁদতে তার দিকে এগিয়ে এলে ফার্স্ট লেডি আমিন এরদোয়ান তাকে বুকে টেনে নেন। এ সময় ওই নারীকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তিনি নিজেও কেঁদে ফেলেন।  মিয়ানমারে অব্যাহত নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শন করতে গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌছান তুরস্কের ফার্স্ট লেডি আমিন এরদোয়ান ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট ক্যাভুফোগলু। এরপর তারা দুপুর দেড়টার দিকে উখিয়ার কুতুপালংয়ে পৌঁছে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধিত ক্যাম্প ও অস্থায়ী ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করেন। কাদামাটিতে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা হেঁটে ক্যাম্পগুলো সরেজমিন দেখেন তারা। এ সময় রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সাথে তারা কথা বলেন এবং তাদের দেশত্যাগের কারণ, দুর্ভোগ, নির্যাতনের বর্ণনা ইত্যাদি শোনেন।

কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা মুখপাত্র ইউনুস আরমান জানান, তুরস্কের ফার্স্ট লেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুতুপালং ও আশপাশের এলাকার বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা হেঁটে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বর্তমান অবস্থা ঘুরে ঘুরে দেখেন। তারা রোহিঙ্গাদের সাথে দোভাষীর সহায়তায় কথা বলেন এবং তাদের পরিস্থিতি ও নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন। এ সময় একাধিক নারীকে বুকে টেনে নিয়ে সান্ত্বনা দেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি আমিন এরদোয়ান।
ইউনুস জানান, রোহিঙ্গাদের এই বিপদের সময় ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন ফার্স্ট লেডি আমিন।
পরে টানা দেড় ঘণ্টার এই পরিদর্শন শেষে সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ যা করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই মানবিক বিপর্যয় থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে তুরস্ক বরাবর বাংলাদেশের পাশে থাকবে। রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশে তুরস্কের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। এ সময় তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুট ক্যাভুফোগলু বলেন, রোহিঙ্গারা অত্যন্ত অমানবিক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য যা করছে সে জন্য তুরস্কের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ। তুরস্ক রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। ভবিষ্যতেও এ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন শেষে তারা বিকাল ৩টার দিকে বিমানযোগে ঢাকায় ফিরে আসেন।