চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অপহৃত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত : প্রধান সন্দেহভাজন সপরিবারে গাঢাকা

 

বাগুন্দার স্কুলছাত্র তানজির অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে আটক ২

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার পোলবাগুন্দা গ্রামের ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন আজানুর হুজুর সপরিবারে পালিয়ে গেলেও দু জনকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। অপহরণের এক সপ্তাহ পার হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে মুক্তিপণ দাবির পর থেকে পুলিশ অপহরকচক্রকে আটক ও অপহৃতকে উদ্ধার করতে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার আঁইলহাস ইউনিয়নের পোলবাগুন্দা গ্রামের চা-দোকানি সামরুল ইসলামের ৮ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে তানজির হোসেন গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। তবে এলাকার অনেকেই কিশোর তানজিরকে কয়েকদিন আগে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারে দেখেছেন। সে আঁইলহাস গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আজানুর হুজুরের সাথে ঘুরে বেড়িয়েছে বলে গ্রামের অনেকেই জানিয়েছে। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করেও তানজিরকে খুঁজে না পেয়ে তার পরিবার বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তানজিরের পিতা বৃহস্পতিবারে এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই দিন মোবাইলফোনে তানজিরের পিতার কাছে অজ্ঞাত ব্যক্তি তানজিরকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করে। সে তানজিরের সাথে কথাও বলিয়ে দেয়। কথা বলার সময় তানজির কান্নাকাটি করছিলো বলে জানিয়েছে তার পরিবার। সে সময় অজ্ঞাত অপহরক তানজিরের মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। একজন দরিদ্র চা দোকানির পক্ষে এতো টাকা দেয়া অসম্ভব জানিয়ে কান্নাকাটির পর মুক্তিপণের পরিমাণ কিছুটা কমানো হয়। বলা হয় বিকাশে দিবি। একই দিনে আরও কয়েকবার মোবাইলফোনে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে চক্রটি। শেষ পর্যন্ত মুক্তিপণ দাবির পরিমাণ ১ লাখ থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার টাকায় নামে। পুলিশ ও তানজিরের পরিবারসূত্রে জানা যায়, তানজিরের পিতার নিকট যে মোবাইলফোন থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়, পুলিশ সেই সিম ট্রাকিং করে জানতে পারে সিমটির মালিক ঝিনাইদহ লাউডাঙ্গা গ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা বখতিয়ার হোসেনের। বখতিয়ার সিমটি ব্যবহারের পর তা বিক্রি করে আলমডাঙ্গা উপজেলার শ্রীরামপুরের জনৈক ব্যক্তি, যিনি তানজিরদের গ্রাম সংলগ্ন আঁইলহাসের আজানুর হুজুরের নানা শ্বশুর। আজানুর এলাকায় প্রতারক হুজুর নামেই পরিচিত। কয়েকদিন আগে সে তার নানা শ্বশুরের নিকট থেকে সিমটি চেয়ে নিয়ে সেই সিম দিয়ে এ মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানাজানি হয়ে পড়লে আজানুর হুজুর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি ছেড়ে সটকে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আজানুরকে আটক করতে না পারলেও তার চাচা সম্পর্কের খাইরুল ইসলামকে (৩৫) আটক করে। আটক খাইরুল মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে। এছাড়াও আরেক সন্দেহাভাজন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লাউদিয়া গ্রামের বিশারত আলীর ছেলে আলমগীর হোসেনকে আটক করে। পুলিশ জানিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে তারা তানজির অপহরণের চ্যাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।