কুষ্টিয়ায় পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় গত মঙ্গলবার সকাল থেকে হঠাৎ করে জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলো। এতে জেলার বিভিন্ন সড়কপথে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। পরে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা শেষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হাতে বিভিন্ন সময়ে শ্রমিক হয়রানির প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের এ শ্রমিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলো জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন। গত সোমবার রাত ৮টার দিকে ইউনিয়নের কার্যালয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন তারা। ওই সভায় জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপ ও বাস মিনিবাস মালিক সমিতির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা প্রশাসন শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে বৈঠকে শ্রমিকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে শোনেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বলেন, প্রশাসন ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিলো। তারাও চায়, আমরাও চাই প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ী ও দোষীরা আইনের আওতায় আসুক। তাদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। আলোচনা শেষে শ্রমিক নেতারা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে।

জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস হোসেন বলেন, ‘প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে যাত্রীদের আসনের নিচে বা সঙ্গে কোনো মাদক থাকলে সেটার ব্যাপারে কোনো শ্রমিককে হয়রানি করা হবে না, আটক করা হবে না। তবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে আটক করতে পারবে। এমন আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছে। রাতে দূরপাল্লার গাড়ি চলবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সব রুটের বাস চলবে।’

জেলায় শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে মঙ্গল ও বুধবার স্থানীয় চারটি সড়কপথ ছাড়াও ঢাকা, খুলনা, রাজশাহীসহ দূরপাল্লার কোনো সড়কপথে বাস ছেড়ে যায়নি। হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি হামিদ মুকুল বলেন, ‘গত এক মাসে সাতটি মাদকের মামলায় শ্রমিকদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাসের কোনো এক জায়গায় মাদক পড়ে থাকলে সেটা সুপারভাইজার বা চালকের দেখার বিষয় না। এটা কোনো যাত্রী কীভাবে ফেলে রাখে, সেটা কীভাবে দেখবে। পুলিশ ও র‌্যাব মাদক পেলেই বাসের চালক ও শ্রমিকদের ধরে নিয়ে যায়। তারা এজাহারে লেখে শ্রমিকদের কাছ থেকে মাদক পাওয়া গেছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম।’ অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এসব মামলা হয়েছে। কোনো হয়রানির উদ্দেশে নয়।