ইবিতে চাকরি প্রত্যাশীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস অবরোধ : শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) চাকরি প্রত্যাশী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের একাংশ চাকরির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক আটকিয়ে বাস অবরোধ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে এমন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে তারা বাস অবরোধ করেন। দীর্ঘক্ষণ বাস অবরোধের কারণে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ১০-১৫ জন সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহগামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আটকে দিয়ে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল জোয়ার্দ্দার এবং ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগের জন্য তারা এ ঘটনা ঘটায়। সোয়া একঘণ্টা অবরোধের পর তারা বাস ছেড়ে দেন। এদিকে বাস আটক থাকার কারণে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহগামী অনেক শিক্ষার্থী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। গন্তব্যস্থলে পৌঁছুতে শিক্ষার্থীদের বাদুরঝোলা হয়ে বিভিন্ন বাস ও ট্রাকে করে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

আইন বিভাগের ছাত্র আব্দুল্লাহ ও শাহরিয়ার রিয়াজ বলেন, চাকরি প্রত্যাশিরা যখন তখন বাস আটকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আর ভোগান্তির শিকার হচ্ছি আমরা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সমাধান দিতে পারছে না। আমরা চাকরি প্রত্যাশীদের বারবার একই কর্মকাণ্ডের কারণে চরম বিরক্তিবোধ করি। এর সমাধান হওয়া উচিত।

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্রী তানিয়া সুলতানা বলেন, আমি কুষ্টিয়া শহরের একটি মেসে থাকি। প্রায় ঘণ্টাখানেক বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। অথচ কোনো বাস পাচ্ছি না। বিকেলে টিউশনি আছে। কখন শহরে পৌছাবো জানি না।

দুপুর সোয়া তিনটার দিকে আটক বাস ছেড়ে দেন চাকরি প্রত্যাশীরা। বাস অবরোধের কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইলিয়াস জোয়ার্দ্দার বলেন, আগামীকাল (আজ বুধবার) একটি সিন্ডিকেট সভা রয়েছে এমনটি শুনেই বাস অবরোধ করা হয়েছে। সিন্ডিকেট সভা করে শুধু শিক্ষক নিয়োগ দেবে আর আমাদের চাকরি দেয়া হবে না তা হতে পারে না। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করা হয়েছে এমন সংবাদেই বাস অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে বার বার চাকরির আশ্বাস দিয়েও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদেরকে নিয়োগ দিতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হাকিম সরকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতির বিষয়ে একটি সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা ছিলো তবে তার কোনো তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। পরে তারা কি আশ্বাসে গাড়ি ছেড়ে দিলো এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তাদের সাথে তো আমার কোনো কথাই হয়নি, আশ্বাসও দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে যারা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগেও চাকরি প্রত্যাশী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দুটি পক্ষ চাকরির দাবিতে বিভিন্ন সময়ে পৃথকভাবে প্রধান ফটক আটকানো এবং বাস অবরোধের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন।