শেষ ১০ ওভারে হয়টা কী বাংলাদেশের!

স্টাফ রিপোর্টার: ওঝা বোধ হয় ডেকে আনার সময় হয়েছে বাংলাদেশের! না হলে যে এ রোগ থেকে মুক্তির কোনো উপায় দেখা যাচ্ছে না। ওয়ানডে ক্রিকেটে রান-প্রসবা ওভার ধরা হয় স্লগ ওভারগুলোকে। কিন্তু বাংলাদেশের খেলা দেখে তো সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। গতকালও ৭ উইকেট হাতে রেখেও শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান মাত্র ৬৪! তবু শেষ তিন ওভারে ৩৩ উঠেছে বলে রক্ষা!  মাঝে কিছুদিন ওয়ানডেতে শেষ ১০ ওভারে ৩০ গজের বাইরে মাত্র ৪ জন ফিল্ডার রাখার নিয়ম করেছিলো। সে সময় দলগুলো রীতিমতো রান উৎসব করেছে। বিশেষ করে শেষ ১০ ওভারেই সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠতেন ব্যাটসম্যানরা। এবি ডি ভিলিয়ার্সের রেকর্ড গড়া ৩১ বলের সেই সেঞ্চুরিটাও ওই আমলের কথা। গত জুলাইয়ের পর থেকেই ওয়ানডে ক্রিকেট খানিকটা বদলেছে। এখন ৩০ গজের বাইরে ৫ জন ফিল্ডার রাখা যায়। তাই আগের মতো রান বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস আর দেখা যায় না। কিন্তু যতই নিয়মের বদল হোক বাংলাদেশের ওয়ানডের চিত্র বদলায়নি একদমই। আগের নিয়ম কিংবা পুরোনো নিয়ম সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা শেষ ১০ ওভার এলেই যেন প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার বদলে উল্টো নিজেরাই চাপে পড়ে যায়!

আফগানিস্তান সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের কথাই চিন্তা করুন। সেদিন অবশ্য পরিস্থিতি একটু ভিন্ন ছিলো। প্রথম ৪০ ওভারেই ৭ উইকেট হারিয়ে বিপদে ছিলো বাংলাদেশ। অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেনের সুবাদে শেষ ১০ ওভারে ৫৪ রান করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ওয়ানডেতে তো সেসব বাধা ছিলো না। ৪০ ওভারে ১৯৬ রান, মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু কী হলো সেদিন? বাকি ৭ উইকেটে বাংলাদেশ সেদিন করেছিল মাত্র ৬৯ রান। গত জিম্বাবুয়ে সিরিজেও বারবার একই গল্প লিখেছে বাংলাদেশ। ৩টি ম্যাচের কোনোটিতেই শেষ ১০ ওভারে ঝড় তুলতে পারেনি মাশরাফির দল। প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাত্র ৫৩ আর সিরিজের শেষ ম্যাচে সেটা ৭১। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে অবশ্য শেষ ১০ ওভার খেলার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের। বলা ভালো খেলার প্রয়োজনই পড়েনি। টপঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরাই ম্যাচ বের করে এনেছেন। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুই ওয়ানডেতেও তাই। শুধু প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাট করেছিলো বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমানের অভিষেকের ম্যাচ বলে অন্য সব কিছু আলোচনায় বাইরে চলে গেছে, কিন্তু সেই ম্যাচেও ৪০ ওভারে ২৪৫ করা বাংলাদেশ পরের দশ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে করেছিল মাত্র ৬২।

গতকাল আফগানিস্তানের ফিল্ডারদের হাস্যকর ও ভয়ঙ্কর সব ভুলে প্রচুর রান উপহার পেয়েছে বাংলাদেশ। তারপরও ৫ উইকেট হারিয়ে ৬৪ রান করেছে। সেটাও শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর দারুণ ইনিংসটির কল্যাণে। অন্যরা যে শুধু আসা যাওয়াই করলেন! ৩৯ থেকে ৪৭ এ ৯ ওভারে বাংলাদেশ তুললো মাত্র ৩৫ রান, ৪ উইকেট হারিয়ে। শেষ তিন ওভারের ৩৩ বাদ দিলে স্লগ ওভারের প্রথম সাত ওভারে রান ৩১ রান! ওঝা হাথুরুসিংহে নিশ্চয়ই ওষুধ খুঁজছেন!