ভেজাল বীজে গাংনীর কপিচাষিদের মাথায় হাত

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মহাম্মাদপুরসহ আশেপাশের গ্রামের কপিচাষিরা ফলন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। কপি তোলার সময় হলেও পাতা জমাট বাধছে না। তাই লোকসান কমাতে পরবর্তীতে ফসল চাষের তাগিদে কপি কেটে ফেলা হচ্ছে। ভারতীয় এক কোম্পানির ভেজাল বীজ কিনে কপিচাষিরা প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। তবে ফলন বিপর্যয়ের বিষয়টি নিম্নমানের বীজের কারণে নাকি অন্য কারণ তা খতিয়ে দেখছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, মহাম্মদপুরের মাটি উর্বর ও এখানকার আবহাওয়া কপিচাষের উপযুক্ত হওয়ায় অধিকাংশ চাষিরা প্রতিবছর বিভিন্ন মেয়াদে কপি চাষ করে আসছেন। চলতি গ্রীষ্ম মরসুমের শুরুতে চাষিরা স্থানীয় বীজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভারতীয় পূজা কোম্পানির বাধা কপির বীজ কিনে ক্ষেতে রোপণ করেছিলেন। ভালোভাবে চারা গজালেও এখন পাতা জমাট বাধেনি। ফলে তা খাওয়ার উপযোগী হচ্ছে না। বেশ কিছুদিন আগে থেকে এলাকায় গ্রীষ্মকালীন বাধা কপি তোলা শুরু হয়েছে। এমন গ্রীষ্মকালীন মরসুম শেষের দিকে। এমতাবস্থায় কপি বিক্রি করতে না পেরে মহাম্মদপুর এলাকার চাষিদের মাঝে চরম হতাশা ও অসন্তোষ দেখা দেয়। অতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করেও ফল মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে কপি কেটে গরুর খাদ্য বানানো হয়েছে। ক্ষেতের কপিসহ অনেকেই চাষ দিয়ে পরবর্তী ফসলের জন্য ক্ষেত প্রস্তুত করছেন। মহাম্মদপুরসহ আশেপাশের গ্রামের চাষিদের অন্তত ৪০-৫০ বিঘা জমির বাধাকপি এভাবেই গো-খাদ্য বানানো হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত চাষিসূত্রে জানা গেছে, মরসুমে এলাকার ও বাইরের কিছু ভ্রাম্যমাণ বীজ বিক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়। ওইরকম কিছু ব্যবসায়ীরা ভালো ফলনের প্রলোভন দিয়ে ভারতীয় পূজা কোম্পানির বাধাকপি বীজ বিক্রি করেছেন। ফলন বিপর্যয় হওয়ার এখন তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

মহাম্মদপুরের কপিচাষি আক্তার আলী জানান, এবার তিনি ৩ বিঘা জমিতে কপিচাষ করেছেন। জমি তৈরি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশা করেছিলেন কপি বিক্রি করে পাবেন দেড় লাখ টাকা। অথচ কপির পাতা না বাঁধায় তার ব্যাপক লোকসান হয়েছে। একই কথা জানালেন কপিচাষি সিরাজ উদ্দীন। তিনি এবার ৪ বিঘা জমিতে কপিচাষ করেছেন। পাতা না বাঁধায় লোকসান গুনেছেন দেড় লাখ টাকা।

কৃষিঅফিস সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়ার সাথে বীজের মিল রয়েছে। শীতকালীন বাধা কপির বীজ যদি গ্রীষ্মকালে লাগানো হয় তাহলে ফলন বিপর্যয় হতে পারে। তাই অনুমোদিত বীজ বিক্রেতার কাছ থেকে ক্যাশমেমো নিয়ে বীজ কেনার তাগিদ দিলেন কৃষিবিদরা।