মুজিবনগর প্রতিনিধি: মুজিবনগরের রতনপুর গ্রামের গৃহবধূ মনিরা খাতুনকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যকাণ্ডের সন্দেহভাজন হিসেবে নিহত গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। গাঢাকা দিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন গৃহবধূর দেবর এরশাদ। গতকাল সোমবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করে। তবে নিহতের স্বামীসহ তার পরিবারের দাবি, পরিবারিক কলহের জের ধরে মনিরা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার রতনপুর গ্রামে গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে বাবু মোল্লার স্ত্রী মনিরা খাতুনকে (২৩) দেবর এরশাদ মোল্লাসহ পরিবারের লোকজন গলা টিপে হত্যা করে বাড়ির পাশে বাথরুমের কাছে ফেলে রাখে। এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশ ভোরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় স্বামী বাবু মোল্লা, শ্বশুর সারু মোল্লা ও শাশুড়ি কল্পনা খাতুনকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন দেবর এরশাদ গাঢাকা দিয়েছেন। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানায়।
মনিরার স্বামীর পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, তাদের মধ্যে প্রায়ই গণ্ডগোল হতো। ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে রোববার রাতে মনিরা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তবে হত্যাকাণ্ডের প্রধান হিসেবে স্বামী বাদে দেবরকে কেন টানা হচ্ছে সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী কামাল হোসেন জানান, হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত নয় পুলিশ। এ প্রশ্নের উত্তর পেতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে যেহেতু নিহতের পিতা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তাই স্বামীসহ ওই তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে রহস্যের জট খুলবে।
এদিকে গতকালই নিহতের পিতা সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় নিহতের দেবর, স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়েছে। গতকালই নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পিতার গ্রামে দাফন করা হয়েছে। প্রায় আট বছর আগে নিহত মনিরার সাথে রতনপুর গ্রামের রাজমিস্ত্রি বাবু মোল্লার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তানাদি নেই। বাবু মোল্লা রাজমিস্ত্রির কাজসহ দিনমজুরি করে সংসার চালান। তবে বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহ ছিলো বলে জানান নিহতের পিতা।