কাশ্মিরজুড়ে বিক্ষোভ : সংঘর্ষে নিহত ৯

মাথাভাঙ্গা মনিটর: ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যে হিজবুল কমান্ডার বুরহান মুজাফফর ওয়ানি নিহতের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। শনিবারের এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯৫ জন, যাদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। তবে নিহতরা সবাইকারী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীরা তিনটি থানা ও দুটি সরকারি ভবনে আগুন দিয়েছে বলে দুই পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সংহিসতায় তিন পুলিশ নিখোঁজ হয়েছে জানিয়ে জম্মু ও কাশ্মির পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এএম সাহাই বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি ছুড়তে বাধ্য হন কর্মকর্তারা।

শুক্রবার দক্ষিণ কাশ্মিরের অনন্তনাগ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের তরুণ কমান্ডার ওয়ানি ও তার দুই সহযোগী নিহতের প্রতিবাদে পুরো কাশ্মিরজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরের অধিকাংশ এলাকা ও দক্ষিণ কাশ্মিরের বেশ কয়েকটি এলাকায় সান্ধ্য আইন জারি করে কর্তৃপক্ষ। শ্রীনগরে ব্যাংক ও অন্যান্য অফিস, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় মোবাইল ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, অন্য এলাকায় মোবাইল সেবা ব্যাহত হচ্ছে। জম্মু বেইস ক্যাম্প থেকে শুরু হতে যাওয়া অমরনাথ যাত্রা কয়েকদিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি চাকরির পরীক্ষা। কাশ্মির উপত্যকার বারামুল্লা থেকে জম্মুর বানিহাল শহর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। দক্ষিণ কাশ্মির দিয়ে যাওয়া শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কও বন্ধ রয়েছে। এদিন বিক্ষুব্ধ জনতা থানা, তল্লাশি চৌকি, টহল পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর যানবাহনে হামলা চালায় বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

এদিকে শনিবার ওয়ানির নিজের এলাকা ট্রলে ২২ বছর বয়সী এই বিচ্ছিন্নতাবাদীর জানাজায় বহু মানুষকে অংশ নিতে দেখা যায়। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বুরহান ওয়ানি কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নতুন পর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন বলে মনে করেন জম্মু ও কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ। বিচ্ছিন্নতাবাদী লড়াইয়ে তরুণ কাশ্মিরিদের উদ্বুদ্ধ করতে নিজের যোদ্ধা জীবনের ভিডিও করে সেগুলো ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করতেন তিনি। তিনি স্থানীয় তরুণদের অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিলেন বলেও বলা হচ্ছে। এক সময়ের উঠতি ক্রিকেটার ওয়ানি সম্পন্ন পরিবারের সন্তান। তার বাবা ট্রলের একটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

পুলিশ জানিয়েছে, সম্ভবত ব্যক্তিগতভাবে একটি গুলিও না ছুড়ে জম্মু ও কাশ্মিরের শীর্ষ ফেরারিদের অন্যতম একজনে পরিণত হয়েছিলেন ওয়ানি।

Leave a comment