ডেকে নিয়ে ধান ঝাড়িয়ে গাছে তুলে নারকেল পাড়াতে বাধ্য করার অভিযোগ : ভাঙচুর
স্টাফ রিপোর্টার: জাফরপুরের মাদরাসার আবাসিকে দুপুরে ঘুমানোর কথা ছিলো মুন্নার। ঘুম দূরাস্ত তাকে ডেকে নিয়ে পাশের বাড়িতে ধান ঝাড়িয়ে নেয়ার পর নারকেল গাছে তুলে নারকেল পাড়াতে গিয়ে ঘটেছে বিপত্তি। মাদরসার পাশেই সহপাঠী রিমনের বাড়ির নারকেল গাছে উঠে আছড়ে পড়ে মারা গেছে সে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। মুন্না নূরনগর পুকুরপাড়ার বিজিবি সদস্য আব্দুল আজাদের ছেলে।
গতরাত সাড়ে ১১টার দিকে একদল যুবক জাফরপুর মসজিদের অদূরবর্তী কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। ভাঙচুরের সময় যুবকরা অভিযোগ তুলে বলে, মাদরাসার হাফেজ মাওলানা আহসান হাবীবের সহযোগিতায় ইউনুস জোয়ার্দ্দার মাদরাসা ছাত্র মুন্নাকে দিয়ে ভ্যাপসা গরমে ধান ঝাড়ানোর পর নারকেল গাছে তুলে দেয়। স্থানীয়দের অনেকেরই অভিযোগ, মুন্নাকে ডেকে নিয়ে বাড়ির কাজ করানোর পাশাপাশি একের পর এক গাছে তুলে নারকেল পাড়ানো হচ্ছিলো। কিশোর নিজেকে সামলাতে না পেরে আছড়ে পড়ে মারা গেলো।
মুন্না চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের নূরনগর পুকুরপাড়ার বিজিবি সদস্য আব্দুল আজাদের ছেলে। সে জাফরপুর আল হাদিয়াতুল ইসলামিয়া হাফেজিয়া মাদরাসার ছাত্র। মাদরাসার আবাসিকেই থাকতে হয়। দেখভালের দায়িত্বে হাফেজ মাওলানা আহসান হাবীব। তার চোখ ফাঁকি দিয়ে মুন্না সহপাঠীর সাথে মাদরাসার অদূরবর্তী সহপাঠীর বাড়িতে গিয়ে নারকেল গাছে উঠলো কীভাবে? এ প্রশ্ন তুলে তীব্র সমালোচনার মধ্যে পড়েছেন হাফেজ মাওলানা আহসান হাবীব। তিনি অবশ্য বলেছেন, মাদরাসাতেই ঘুমানোর কথা ছিলো। না ঘুমিয়ে কখন যে জেগে সে তার সহপাঠীর সাথে গিয়েছে বুঝতে পারিনি। ডাব গাছে সে নিজেই উঠেছে নাকি তাকে কেউ বাধ্য করেছে তা বলবো কীভাবে।
মুন্নার সহপাঠী জাফরপুর মসজিদপাড়ার ইউনুস আলী জোয়ার্দ্দারের ছেলে আব্দুল জব্বার রিমন। উঁচু নারকেল গাছে তুলে দিয়ে নারকেল পাড়ানো হচ্ছিলো বলে স্থানীয় কয়েকজন জানালেও সংশ্লিষ্টরা অবশ্য তা অস্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, বিকেল ৪টার দিকে সে গাছে ওঠে। গাছ থেকে আছড়ে পড়লে দ্রুত উদ্ধার করে নেয়া হয় হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ নেয়া হয় নূরনগর পুকুরপাড়াস্থ নিজ বাড়িতে। তার পিতা বিজিবি সদস্য আব্দুল আজাদ বর্তমানে বান্দরবানে কর্মরত। সেখান থেকে গতরাতেই চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি। ফিরলে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে। মুন্না দু ভাইয়ের মধ্যে ছিলো বড়।
অপরদিকে গতরাত পোনে ১০টার দিকে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একদল যুবক জাফরপুরের আতিয়ার রহমান জোয়ার্দ্দার ও জান মোহাম্মদ বেলুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আতিয়ার রহমান জোয়ার্দ্দারের বাড়ির টিভি, ফ্রিজ, শোকেচ, আসবাবপত্রসহ বৈদ্যুতিক মিটার ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আতিয়র রহমান অভিযোগ করে বলেছেন, আমার পুত্রবধূ নাসিমা খাতুনকে মেরে ওরা পা ভেঙে দিয়েছে। ভুট্টা বিক্রির টাকাও হাতিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া বেলুর বাড়িতে টিনের দরজায় আঘাত করা হয়।
আতিয়ার রহমান বলেছেন, আমাদের বাড়িতে তো ওই মুন্নাকে ডাকা হয়নি। সে নিজেই ডাব খেতে চেয়েছিলো। শুনেছি মুন্নাই ডাব খেতে চেয়েছিলো। তাই বলা হয়েছে গাছের ফল পারো যদি পেড়ে খাও। নিজেই খাওয়ার জন্য ডাব পাড়তে গিয়ে অসতর্কতায় পড়ে গেছে। এখন নানা অভিযোগ করা হচ্ছে।