চুয়াডাঙ্গয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক
ফাইজার চৌধুরী: চুয়াডাঙ্গার সমস্যা, সম্ভাবনা তথা সামগ্রিক বিষয় তুলে ধরার জন্য স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতীয় পত্রিকার চেয়ে স্থানীয় পত্রিকার গুরুত্ব অনেক বেশি গতকাল রাতে চুয়াডাঙ্গা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক।
গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা সফরে দিনব্যাপী ব্যস্ত সময় কাটানোর পরও এখানে কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে বৈঠকের কথা ভোলেননি ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক প্রধান ড. আরেফিন সিদ্দিক। এরই অংশ হিসেবে রাত সাড়ে ৯টা থেকে টানা এক ঘণ্টা চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকদের বিভিন্ন কথা শোনেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি আজাদ মালিতার সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক আকাশ খবর সম্পাদক অ্যাড. তছিরুল আলম মালিক ডিউক, রাজীব হাসান কচি, বিপুল আশরাফ, আতিয়ার রহমান এবং প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক ফাইজার চৌধুরী।
সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন- মফস্বলের জন্য হাতে গোনা দু একটি মিডিয়া হাউজ ছাড়া কেউই প্রাপ্য সম্মানিভাতা দেয় না। ওয়েজ বোর্ড তো দূরের কথা। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকরা সব ক্ষেত্রে অনেক বেশি উপেক্ষিত। অথচ অপরাধ, রাজনীতি, কৃষি, খেলাধুলা সবধরনের খবর একাই সংগ্রহ করে পত্রিকা বা টেলিভিশন চ্যানেলে সরবরাহ করেন মফস্বল সাংবাদিকরা। স্থানীয় সাংবাদিকদের জন্য কোনো নীতিমালা না থাকায় যে কেউ এ পেশায় ঢুকে পড়ছেন, অপসাংবাদিকতার দায় পড়ছে সকলের ওপর। এ জন্য মফস্বল সাংবাদিকতায় শিক্ষাগত যোগ্যতার ন্যূনতম শ্রেণি নির্ধারণ করা একান্ত জরুরি বলে ঢাবি উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন সাংবাদিকবৃন্দ। একই সাথে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষনের কথাও উল্লেখ করা হয়।
সাংবাদিকদের উপস্থাপিত কথার উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঢাকার বাইরে সাংবাদিকতায় অনেক ঝুঁকি তাই বলে সত্য প্রকাশে কেউ পিছিয়ে থাকবেন না। বস্তুনিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ, সত্যপ্রকাশ সাংবাদিকতার মূলমন্ত্র। সেই সাথে নীতি নৈতিকতা ঠিক রেখে সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। বর্তমান সরকার সাংবাদিক বান্ধব। স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন অভাব অভিযোগ সময় ও সুযোগমতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। তবে দাবি আদায়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সাংবাদিকতার নীতিমালা তৈরিতে তথ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে তিনি জানান।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পিআইবির সাবেক মহাপরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক শেখ আব্দুস সালাম চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। সাংবাদিকতায় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। ঘোষণার দাবির প্রেক্ষিতে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের সাথে ঢাবি উপাচার্যের মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ হামীম হাসান, সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি আহমেদ পিপুল।
এদিকে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে একপ্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ.আ.স.ম আরেফিন সিদ্দিকের আগমনে তাকে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে ও বিশেষ সম্মাননায় ক্রেস্ট তুলে দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও প্রধান অতিথিকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশিক ইকবাল স্বপন, সাধারণ সম্পাদক তানিম হাসান তারেক, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য খালিদ মাহামুদ, সাবেক স্কুল ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাজু আহম্মেদ, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি জাবিদুল ইসলাম জাবিদ, কলেজ ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা শাকিল আহম্মেদ জিম, বরকত হাসান জোয়ার্দ্দার, শিমুল লস্কর, রানা, আসাদ, আলহিম, ইসরাইল, আলিফনুর, জুয়েল, রায়হান, মিঠুন, ঝিংকু, প্রান্ত, জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা অয়ন হাসান জোয়ার্দ্দারসহ কলেজ ছাত্রলীগ ও পৌর ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা।