চুয়াডাঙ্গায় দ্বিতীয় এনপিএল ক্রিকেট লিগের উদ্বোধন : নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমির ভূয়সী প্রশংসা
স্টাফ রিপোর্টার: জাঁকজমক পূর্ণ আয়োজনের মধ্যদিয়ে চুয়াডাঙ্গায় দ্বিতীয় এনপিএল ক্রিকেট লিগের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা টাউন ক্লাব ফুটবল মাঠে ওই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। বেলা ১১টার ২ মিনিট আগেই প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের গাড়ি হাজির হয় রঙিন বেলুন দিয়ে সাজানো টাউন ক্লাব ফুটবল মাঠের সুসজ্জিত ফটকের সামনে। এর পর হাজির হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুনউজ্জামান ও চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হকের গাড়ি। অবশ্য আগেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। সাথে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি আজাদ মালিতা, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হযরত, চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার লেমন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিবেশক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তবিবুর রহমান জোয়ার্দ্দার বাবু, এনপিএল ক্রিকেট লিগের কো-চেয়ারম্যান ওয়াল্টন এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর মাহফুজুর রহমান জোয়ার্দ্দার মিজাইল, এনপিএল ক্রিকেট লিগের সদস্য সচিব নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মোতালেব, জনতা ব্যাংক রেল বাজার শাখার ব্যবস্থাপক ইছাহক আলী, পৌর কাউন্সিলর শহিদুল কদর জোর্য়াদ্দার, সাবেক এএফসির ফুটবল কোচ সরোয়ার হোসেন জোয়ার্দ্দার মধু, সাবেক ক্রিকেটার পিন্টু কুমার আগরওয়ালা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শাহজাহান আলী, বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি রুবায়েত বিন আজাদ সুস্থির, সাব্বির কামাল, আনন্দ, শান্তি প্রমুখ। প্রধান ফটকে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস সকল আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে নিয়ে ফিতা কাটেন। সাথে সাথে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ১২০ জন ক্ষুদে ক্রিকেটারদের করতালিতে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠের আকাশ মুখরিত হয়ে ওঠে। অতিথিগণ ক্রিকেটারদের সাথে যখন করমর্দন করতে থাকেন তখন বৃষ্টির মতো ঝরা ফুলের বৃষ্টি পড়তে থাকে তাদের ওপর। এরপর অতিথিগণ পতাকা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে আবহাওয়া কণ্ঠের সাথে সাথে ক্রিকেটারদের গাওয়া জাতীয় সঙ্গীতের তালে জাতীয় ও ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমির উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস এবং ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করেন ক্রিকেট একাডেমির সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম জোর্য়াদ্দার টোটন। পতাকা উত্তোলন শেষে অতিথিগণ ক্রিকেট পিচে গিয়ে ব্যাট-বোলিং করেন। প্রধান অতিথি খুব আনন্দের সাথেই সালমা খাতুনদের উত্তরসূরী হিসেবেই ব্যাট করেন। অন্যান্য অতিথিরাও ব্যাটিং ও বোলিং করেন। এরপর অতিথিগণ বক্তৃতা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। মঞ্চে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণার পাশাপাশি বলেন, শুনেছি এ ক্রিকেট একাডেমি থেকে বিকেএসপিতে ক্রিকেটার চান্স পেয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬ ও ১৮ দলে একাধিক ক্রিকেটার জায়গা করে নিয়েছে। খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও চুয়াডাঙ্গার হয়ে এ ক্রিকেট একাডেমির ক্রিকেটাররা জায়গা করে নিয়েছে। তাই আমি মনে করি চুয়াডাঙ্গার ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে চুয়াডাঙ্গা নাইটিঙ্গেল ক্রিকেট একাডেমির ভূমিকা বেশ প্রসংশনীয়। তাদের উত্তর উত্তর সাফল্যের পথ বেয়ে নিশ্চয় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে চুয়াডাঙ্গার ক্রিকেটাররা একদিন জায়গা করে নেবে। বিশেষ অতিথি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুনউজ্জামান ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করার পাশাপাশি ক্রিকেটারদের ক্রিকেট সরঞ্জাম সহায়তার ঘোষণা প্রদান করেন। সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম জোর্য়াদ্দার টোটনের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে মার্কস অলরাউন্ডার খ্যাত ছোট্ট মেয়ে ইয়াসা হাসানের মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন ক্রিকেট একাডেমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ করে নতুন মাত্রা। এরপর অতিথিদের উপস্থিতিতে টসের মাধ্যমে শুরু হয় উদ্বোধনী ম্যাচ।
উদ্বোধনী ম্যাচে দর্শনা ডেয়ার ডেভিল্স ৫ উইকেটে ফ্রিডম ফাইটার আটকবর দলকে পরাজিত করে শুভসূচনা করে। টসে জয়লাভ করে ফ্রিডম ফাইটার আটকবর প্রথমে ১২৯ রান সংগ্রহ করে। দলের সহঅধিনায়ক মাহফুজ ৩৪ বলে সর্বোচ্চ ৬৭ রান সংগ্রহ করে। জবাবে দর্শনা ডেয়ার ডেভিল্স ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে (১৩০ রান) পৌঁছে যায়। উদ্বোধনী ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয় বিজয়ী দলের মতিয়ার রহমান। উদ্বোধনী খেলাটি পরিচালনা করেন আম্পায়ার শরীফ জোয়ার্দ্দার, মেহেদী হাসান ও সেলিম পারভেজ। প্রথম ম্যাচের প্রতিযোগিতা শেষে ম্যান অব দ্য ম্যাচ, হাইয়েস্ট উইকেট টেকার, হাইয়েস্ট স্কোরার ও বিগ সিক্স হাঁকানো খেলোয়াড়দের পুরস্কার তুলে দেন সাইফ রাসেল, হাসানুজ্জামান, ইমরান হোসেন সোহেল, ফিরোজ আহম্মেদ, দেলোয়ার হোসেন, রাসেল, চঞ্চল প্রমুখ।