গ্রেফতারকৃত দু আসামির পিতাকে ধরে পিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ

আলমডাঙ্গা ব্যুরো/জামজামি প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার মধুপুর বানিনাথপুরের মেম্বারের শিশুপুত্র এনামুলকে নৃশংস হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত দুজনের দু পিতাকে ধরে পিটুনির পর পুলিশে দেয়া হয়েছে। বাড়ি ভাঙচুরের পর এবার দু আসামির পিতাকে ধরে শিশু এনামুলের পিতা ইউপি মেম্বার নূর ইসলামকে হত্যা অপচেষ্টার অভিযোগ তুলে পুলিশে দেয়ার ঘটনা ঘটলো।
শিশু এনামুল হত্যা মামলাটি তদন্তাধীন। এরই মাঝে আসামিদের বাড়িতে রক্তমাখা লুঙ্গি পাওয়া এবং কবর দেয়ার জন্য গর্তের সন্ধান মিলেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। আসামিদের বাড়ি ভাঙচুর করে শুধু নিশ্চিহ্নই করা হয়নি, দীর্ঘ সময় ধরে চালানো হয়েছে লুটপাট। এরই এক পর্যায়ে গতকাল শিশু এনামুল হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত রেজাউল ইসলামের পিতা আব্দুস সাত্তার ও রেজাউলের ভগ্নিপতি পাঁচলিয়ার নায়েব আলীর পিতা ফিকির আলীকে গতকাল বানীনাথপুর থেকে ধরে পিটুনি দেয়া হয়। বলা হয়, শিশু এনামুলের পিতা ইউপি মেম্বার নূরুল ইসলামকে হত্যার জন্যই তার বাড়ির সামনে ঘুরছিলো। এ অভিযোগে দু বৃদ্ধকে ধরে গণপিটুনি শেষে পুলিশে দেয়া হয়েছে। পুলিশের দেয়ার পর দু বৃদ্ধ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমরা আমাদের কাজে গ্রামের মধ্যে ছিলাম। কোনো মানুষ কি ওইভাবে খুন করতে যায়?
জানা গেছে, জামজামি ইউপি সদস্য নূর ইসলামের ৩ বছরের শিশুপুত্র এনামুলকে গত বছর ২০ নভেম্বর অজ্ঞাত দুর্বৃতরা পার্শ্ববর্তি ফজলুর পানবরোজে নিয়ে নৃশংসভাবে গলা কেটে খুন করে। ওই পাশবিক ঘটনায় শিশুর পিতা ইউপি মেম্বার নূর ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এজাহারভূক্ত সকল আসামিকে পুলিশ আটক করলেও পুলিশ তাদের মুখ থেকে শিশু হত্যার বিষয়ে তেমন তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। এ ঘটনার মাস অতিক্রান্ত হতে না হতেই গতকাল শুক্রবার রাত ৮ টার দিকে নূর ইসলামের বাড়ির নিকট থেকে আব্দুস সাত্তার ও ফিকির আলিকে (৬০) আটক করে শিশু এনামুলের পিতা পক্ষের লোকজন। আটক আব্দুস সাত্তার প্রধান সন্দেহভাজন আসামি রেজাউলের শ্বশুর। ফিকির আলী আরেক সন্দেহভাজন আসামি নায়েব আলীর পিতা। এ সময় তাদের নিকট থেকে ২টি দা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। গণধোলাইয়ের শিকার ২জনকে বর্তমানে হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।
এদিকে, গণধোলাইয়ের শিকার দুজনই তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সবই তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন। তারা জানিয়েছে, দুজনই অসুস্থ আত্মীয়কে দেখে পারিবারিক প্রয়োজনে একই গ্রামের রেজাউলের সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলো। সে সময় তাদেরকে ধরে মারপিট করে মিথ্যা অভিযোগ তুলে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Leave a comment