স্টাফ রিপোর্টার: ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা ভেবে বিদ্যুত ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় বিদ্যুত ও জ্বালানি সপ্তাহ- ২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশেই গতকাল বিদ্যুত ও জ্বালানি সপ্তাহ শুরু হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, বিদ্যুত ও খনিজসম্পদ উৎপাদন অত্যন্ত ব্যয়বহুল কার্যক্রম। এতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে। সামর্থ্য থাকলেই যথেচ্ছ বিদ্যুত ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাই আগামী প্রজন্মের কথা ভেবে বিদ্যুত ও প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। আবদুল হামিদ বলেন, আপনারা জানেন, বিশ্ব রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। নিজস্ব সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের দায়বদ্ধতা থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করতে হবে। পরে বিদ্যুত ও জ্বালানি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ১৩ বিজয়ীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন রাষ্ট্রপতি। বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম।
এদিকে ‘আলোর পথে আরও এগিয়ে’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত ও জ্বালানি সপ্তাহ ২০১৫ উপলক্ষে র্যা লি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকো লিমিটেডের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যা লি বের করা হয়। জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের নেতৃত্বে র্যা লিটি শহরের কোর্ট রোড প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শেষ হয়। র্যা লিতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আব্দুর রাজ্জাক, চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকো লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুক্ত গীন, সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান, আহসান হাবিবসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ। পরে চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকো লিমিটেড কার্যালয়ে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকো লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুক্ত গীনের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় অতিথি ছিলেন সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান ও আহসান হাবিব। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ওজোপাডিকো লিমিটেডের গ্রাহকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। ২০২১ সালে বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ২৪ হাজার মেগাওয়াট ও ২০৩০ সালে তা ৪০ হাজার মেগাওয়াট। বিদ্যুত ও জ্বালানিখাত উন্নয়নে সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করা এবং বিদ্যুত ও জ্বালানির সংযমী ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর জাতীয় বিদ্যুত ও জ্বালানি সপ্তাহ উদযাপন করা হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া বিদ্যুতের গ্রাহকসেবা বৃদ্ধি, রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম, অপচয় রোধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা করা হয়।
মহেশপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মহেশপুর বিদ্যুত সরবরাহ ওজোপাডিকো লি. এবং ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুত সমিতির যৌথ উদ্যোগে মহেশপুরে জাতীয় বিদ্যুত সপ্তাহ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য ৱ্যালি অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মহেশপুর বিদ্যুত সরবরাহের আবাসিক প্রকৌশলী অমল কৃঞ্চ জোয়ার্দ্দার ও ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুত সমিতির মহেশপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে ৱ্যালিটি মহেশপুর উপজেলা চত্বর থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজ মোড়ে এসে শেষ হয়। ৱ্যালিতে উপস্থিত ছিলেন, ওজোপাডিকো লি. মহেশপুর বিদ্যুত সরবরাহের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক, মহেশপুর থানার সেকেন্ড অফিসার ফরিদ উদ্দিন, পল্লী বিদ্যুত সমিতি বোর্ডের সহসভাপতি ও ১নং এলাকার পরিচালক মিজানুর রহমান, ২নং এলাকার পরিচালক ওয়ালিদ হোসেন, সহকারী জেনারেল ম্যানেজার শফি কামাল, পাউয়ার ইঞ্জিন কোঅর্ডিনেটর নুর ইসলাম, সহকারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আক্তার হোসেন, বিল্ডিং সুপারভাইজার কাজল রেখা, ওয়্যারিং পরিদর্শক আসাদুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, লাইন টেকনিশিয়ান সরোয়ার হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন, টিপু সুলতান প্রমুখ।