স্টাফ রেপর্টোর: দেশে প্রথমবারের মতো বিদেশি মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন বা দু হাজার ৭০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের আগেই রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৭ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি। রিজার্ভের এ পরিমাণ অন্তত সাত মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান।
গতকাল এক অনুষ্ঠানে গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ বাড়ার বিষয়টি দেশের জন্য সুখবর। অনেক দেশ যখন ঘাটতির সমস্যা মোকাবিলা করছে তখন বাংলাদেশকে ‘উদ্বৃত্ত’ কাজে লাগানোর বিষয়ে ভাবতে হচ্ছে। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও রিজার্ভ বাড়ছে মূলত ভালো রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বিদেশি বিনিয়োগের কারণে। তিনি জানান, রিজার্ভ বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উদ্বুদ্ধ হয়। একই সাথে বৈদেশিক মুদ্রা কারসাজির সাথে জড়িতরা সতর্ক হয়ে যায়। কেননা তারা জানে পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেকোনো সময় তা বাজারে ছাড়তে পারে।
রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান জানান, আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের) ইসিএফ ঋণের শেষ দু কিস্তির সাড়ে ২৫ কোটি ডলার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। এ ছাড়া আগে থেকেই রিজার্ভ বাড়ছিল। তিনি জানান, জ্বালানি তেল ও খাদ্যের দাম কম থাকাসহ কিছু কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ব্যয় তুলনামূলক কম হয়েছে। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে তেলের আমদানি ব্যয় কমেছে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ। অর্থাৎ আমদানির পরিমাণ না কমলেও দাম কমার কারণে ব্যয় কমেছে। ফলে আগের তুলনায় অনেক কম বিদেশি মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে, যা রিজার্ভ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ও মোটামুটি ভালো অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা এখন বিদেশ থেকে প্রচুর ঋণ আনছেন বিদেশি মুদ্রায়, পরোক্ষভাবে যা রিজার্ভ বাড়াতে সহায়তা করছে।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ গত ১৭ আগস্ট ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এই সঞ্চয়ন ১৫ বিলিয়নের ঘর ছাড়িয়েছিলো ২০১৩ সালের ৫ মে। আর ১০ বিলিয়নের মাইলফলকে পৌঁছেছিলো ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর।
বর্তমানে রিজার্ভের দিক দিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম অবস্থানে থাকা ভারতের রিজার্ভের পরিমাণ ৩১৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আর তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানের রিজার্ভ ১৫ বিলিয়ন ডলার।