আলমডাঙ্গা ব্যুরো: মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে আলমডাঙ্গার বাঁশবাড়িয়া গ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছে। একই পরিবারের ৫ জনসহ ৮ জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ উঠেছে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মহাবুল গ্রুপের বিরুদ্ধে। ৮ জনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩ জনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হাতেম আলী গ্রুপের সাথে একই গ্রামের সাবান মণ্ডলের ছেলে মহাবুল গ্রুপের বিরোধ বেশ পুরাতন। গ্রামের একমাত্র মসজিদটি মহাবুলদের পাড়ায় অবস্থিত। ওই মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে বিভিন্ন কারণে হাতেম আলী গ্রুপের লোকজনকে মহাবুল গ্রুপ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। এমন অভিযোগ থেকে গ্রামের দক্ষিণপাড়ার নদীর ধারে তারা নতুন করে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। গত ২০ অক্টোবর জিয়ার ও সমের আলী নামক ২ ব্যক্তি ৪ কাঠা জমি নির্মিতব্য মসজিদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। এ নিয়ে গ্রামের ২ পক্ষের বিরোধ আরও তুঙ্গে ওঠে। এ ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মহাবুল গ্রুপ। গতকাল বুধবার দুপুরে মহাবুল, মৃত ফয়জুদ্দীনের ৩ ছেলে, হাউস আলীর ছেলে আলম ও কালাম, আয়ুব আলীর ছেলে ফেলা ও মুন্নাফ, সুলতান আলী ও তার ছেলে গিয়াসসহ ২০/২৫ জন লোক একই গ্রামের প্রতিপক্ষ আজির হকের বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আজির হকের স্ত্রী সুফিয়া খাতুনের মাথা কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আজির হকের ছেলের বউ জালিমুন খাতুন ও হানুর ছেলে সমিরকে কুপিয়ে জখম করে। এছাড়া একই পরিবারের ৫ জনকে একে একে কুপিয়ে জখম করে তারা। এরা হলেন মৃত আকবারের ছেলে হাতেম আলী, রবগুল, আমির এবং হাতেম আলীর ছেলে রাজিব ও ভাগ্নে উজ্জ্বল। এদের ৫ জনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও ৩ জনকে আলমডাঙ্গার হারদী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া হাতেম আলী, উজ্জ্বল ও রাজিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ইতঃপূর্বে মহাবুল গংদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করে প্রতিপক্ষের ৫ বিঘা জমির মেহগনি গাছ কেটে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এ বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি এ ঘটনা ঘটে। বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ভাদু মণ্ডলের ছেলে সমির মণ্ডলের কাছে জনৈক ব্যক্তি নিজেকে চরমপন্থি দলের নেতা মুকুল বলে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ বিষয়ে গত ৮ মার্চ আলমডাঙ্গা থানায় জিডি দায়ের করেন সমির মণ্ডল। জিডি দায়েরের ঘটনায় চাঁদাবাজদের সাথে বিরোধ আরও তুঙ্গে ওঠে। গত এপ্রিল মাসে রাতে অজ্ঞাত সমির মণ্ডলের ভাই লিহাজ উদ্দীন কালুর আড়াই বিঘা জমিতে রোপনকৃত প্রায় ৩ বছর বয়সি ৫ শ মেহগনি গাছের চারা কেটে দেয়। এতেও এ অপচক্রের বর্বরতা এতোটুকু কমেনি। তারা একই সময়ে মৃত আতাহার আলীর ছেলে রবিউল ইসলামেরও আড়াই বিঘা জমির ৫শ মেহগনি গাছের চারা কেটে দেয়।