গাংনীতে দর্জিদের নির্ঘুম রাত : পছন্দের স্টাইলের পোশাক তৈরিতে অন্যরকম অনুভূতি

মাজেদুল হক মানিক: ঈদ আনন্দের অন্যতম উপকরণ নতুন পোশাক। তবে তৈরি পোশাকের চড়া দাম শুনে অনেকেই মুখ ফিরিয়ে পছন্দের কাপড় কিনে দিচ্ছেন দর্জি বাড়ি। আগে ভাগই ডেলিভারি দিতে হবে এ জন্যই ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জি কারিগররা। যেন দম ফেলারও ফুরসত নেই। মেহেরপুর জেলা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত একই চিত্র। ক্রেতারা বলছেন, রেডিমেড কাপড়ের চেয়ে পছন্দের স্টাইলের পোশাক তৈরি করে পরতে পারা এক অন্যরকম অনুভূতি।

গাংনীর আমিরুল মার্কেটের মকলেছুর রহমান জানান, কেনা পোশাকের দাম বেশি হওয়ায় পছন্দের কাপড় কিনছেন ক্রেতারা। পরে টিভি চ্যানেলের বিভিন্ন সিরিয়ালের নায়িকাদের ক্যাটালগ দেখিয়ে তৈরির অর্ডার দিচ্ছেন। এতে তাদের খরচ অনেকটা কমে যাচ্ছে। সময়মতো পোশাক ডেলিভারি করতে সকলেই যেন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দিন-রাত সব সময় কাজ আর কাজ। সারাদিনে কয়েক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে চলে সেলাই। কাজের চাপ এতোই বেশি যে, ১৫-১৬ রোজার পর থেকে আর কোনো অর্ডার নেয়া সম্ভব হবে না।

জেলার বিভিন্ন টেইলার্সদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুধু মেয়েরা নয়, ছেলেরাও পছন্দের কাপড় কিনে বানাচ্ছেন শার্ট-প্যান্ট। সুন্দর ও বডি ফিট করে সঠিক মাপের পোশাক বানাতে তারা ভিড় জমাচ্ছেন টেইলার্সে। ঈদের আগে সময়মতো পোশাকগুলো সরবরাহ করতে না পারলে ঈদ আনন্দ মলিন হবে ক্রেতাদের। তাই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা।

গাংনী ডাইমন্ড টেইলার্সের মালিক নজরুল ইসলাম জানান, তার দোকানে ৬ জন কারিগর কাজ করেন। বছরের অন্য সময়ে দিনে দু থেকে তিনশ টাকা আয় করলেও এখন প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়শ টাকা আয় করছেন। রোজার প্রথম থেকেই প্রচুর কাজ পাওয়ায় খুশি তারা। সময়মতো পোশাকটি সরবরাহ করতেই এখন প্রাণপণ চেষ্টা তাদের। বোম্বে টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দীন জানান, এখন পুরোদমে রাত-দিন কাজ চলছে। চাহিদা অনুযায়ী ঈদের আগে কাজ শেষ করতে তারা প্রতিজ্ঞ। টেইলার্সের দোকানে আসা কয়েকজনের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, কেনা পোশাকে শুধু নাম আর দাম বেশি। কাপড়ের মানও তেমন ভালো না। তাই নিজের রুচিশীল পোশাকের জন্য কাপড় কিনে তৈরি করতে দিয়েছেন তারা। ঈদের আগেই ডেলিভারি নিতে হবে তাই একটু আগে-ভাগই মার্কেটে আসা বলে জানিয়েছেন অনেকেই।

Leave a comment