ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পেট্রোলবোমায় যাত্রী হত্যা
স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গাড়িতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে যাত্রী হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশির উদ্দিন গতকাল বুধবার বিকালে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া, এমকে আনোয়ার, যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও শওকত মাহমুদ, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক ছাত্রনেতা হাবিব-উন-নবী খান সোহেল প্রমুখ।
গত ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি সেখানে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী। ওই ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি বিকালে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে এম নুরুজ্জামান। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/২৫(ঘ) ধারায় দায়ের করা মামলায় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ১৮ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী হিসেবে যাত্রাবাড়ী বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় সোহাগ ও লিটন নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা বর্তমানে কারাগারে আছেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা কারা কারা জড়িত, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন বলে পুলিশ জানায়।
অন্যতম অভিযুক্ত বোমা রাসেল পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় আসামির তালিকা থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে গাড়িতে হামলার ব্যাপারে সোহাগ ও লিটনের জবানবন্দিতে উঠে আসে হরতাল ও অবরোধকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার কথা। ঘটনার দুই দিন আগে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের পাশের একটি বাসায় বৈঠক করে ওই হামলার ছক চূড়ান্ত করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগরীর সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ বেশ কয়েকজন মধ্যম সারির নেতা। যাত্রাবাড়ী এলাকার জনি নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে মাঠ পর্যায়ের হামলার বিষয়টি সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। লেগুনাচালক শহীদুল্লাহ, বোমা রাসেল, সাব্বির, সোহাগ ও পারভেজসহ কয়েকজন গাড়িতে আগুন দেয়ার সময় ঘটনাস্থলের আশপাশে উপস্থিত ছিলেন।