আলমডাঙ্গার স্কুলছাত্রী তাহেরা খাতুন হত্যামামলা : সহযোগিতার আশায় মামলার বাদী
স্টাফ রিপোর্টার: স্কুলছাত্রী তাহেরা খাতুনের পিতা শাজাহান দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি কোথায় গেলে তার কন্যা হত্যার বিচার পাবেন? কী করলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা যাবে? এসব প্রশ্ন নিয়ে গতকাল চুয়াডাঙ্গা শহরের পথে পথে ঘুরে দিশা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত মাথাভাঙ্গা দফতরে হাজির হন। বলেন, কিছুই তো বুঝতে পারছি না, কিছু্ই তো করতে পারছি না। কোথায় গেলে ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ খুঁজে পাবো?
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহেরা খাতুনের মৃতদেহ আনন্দধামস্থ ভাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় গত ৮ ডিসেম্বর বিকেলে। ওইদিন সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ লাশ হেফাজতে নেয়। পরদিন ৯ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত করা হয়। পৈত্রিক গ্রাম আলমডাঙ্গার ছত্রপাড়ায় দাফন করা হয়। ঘটনার পর কেউ কেউ প্রচার করে জিনে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে মৃতদেহ। এতে বিভ্রান্ত হয়ে তাহেরার পিতা মামলা করতে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকে। লাশ দাফনের একদিন পর আলমডাঙ্গা থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন তাহেরার পিতা শাজাহান আলী।
লাশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। লাশের ওপর পাশবিক নির্যাতনেরও স্পষ্ট আলামত শাদা চোখে দেখা যায়। ধর্ষণের আলামতেরও খবর পাওয়া যায়। আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যামিক বালিকা বিদ্যালয়সহ এলাকার স্কুল-কলেজর শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আপামর জনতা হত্যার প্রতিবাদসহ হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় নামে। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে প্রাইভেট টিউটার রাশেদকে গ্রেফতার করে। অবশ্য মামলার বাদীর সন্দেহ ভাড়ার বাসার মালিকের ছেলে বাচ্চুসহ তার কয়েক সহযোগীর দিকে। ঘটনার সপ্তাহের মধ্যেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের হাতে পৌঁছায়। হত্যা নয় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানানো হলে নানা প্রশ্ন দানা বাধে। মামলার বাদী ময়নাতদন্ত ভুল হয়েছে বলে মন্তব্য করে পুনঃময়নাতদন্তের আবেদন জানানোর কথা বলেন। গতকাল রোববার সে লক্ষ্যে তিনি তার কয়েক নিকটাত্মীয়কে সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গার পথে পথে ঘোরেন। অবশেষে মাথাভাঙ্গা দফতরে পৌঁছে উপরোক্ত প্রশ্ন তুলে কন্যা হত্যার বিচারে অবিচল থাকার কথা জানিয়ে অশ্রু ঝরান। তিনি বলেন, শুনছি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থানায় দিয়েছে। পুলিশের কাছে চাইলাম, দিলো না। বললো ওটা আদালতের মাধ্যমে নিতে হবে।
কেউ কি হুমকি ধামকি দিচ্ছে? পথের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কেউ? এসব প্রশ্নের জবাবে তাহেরার পিতা বলেছেন, না এরকম কেউ কিছু করছে না। প্রকাশ্যে কারোর চোখরাঙানিও নেই। গোপনে কেউ কিছু করছে কি-না তা বুঝতে পারছি না। গোপনে ষড়যন্ত্র বুঝবো কীভাবে? আইনজীবীর কাছে গেছেন? মামলা যেহেতু আইনি প্রক্রিয়ায়, সেহেতু আইনজীবীরসহ মানবাধিকার কর্মীদের সহযোগিতা নেয়াই ভালো নয় কি? বুঝতে পারছি না বলেই তো আমি আইনজীবীদের সহযোগিতা পেতে চাই। কিন্তু কোথায় গেলে তা পাওয়া যায়?